মিরপুরের ‘ডন’ হতে চেয়ে চুক্তিতে খুন!
রাজধানীর মিরপুরের ‘ডন’ হতে চেয়েছিলেন মো. হৃদয়। জন্ম দিতে চেয়েছিলেন আলোচনা-সমালোচনার। এ জন্য হৃদয় চুক্তিতে খুন করার কাজ শুরু করেন। সর্বশেষ গত ১২ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর মিরপুরে দুই লাখ টাকার চুক্তিতে শাহাদাত হোসেন হাসিব নামের এক কিশোরকে ছুরি মেরে হত্যা করে হৃদয় ও তার সহযোগীরা।
আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত উপকমিশনার এ জেড এম তৈমুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শাহাদাত হোসেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশালের ঝালকাঠি থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে হৃদয়ের দেওয়া তথ্যে ওই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার সহযোগীসহ চারজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শাহ আলী থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, ১৭ বছর বয়সী কিশোর শাহাদাতকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হৃদয়ের বয়স ১৮। সে ছাড়া গ্রেপ্তার বাকি চারজনের মধ্যে একজন ১৬ বছরের কিশোর। বাকি তিনজন হলেন মোফাজ্জল হোসেন মণ্ডল (৩০), হুমায়ুন কবির (৬৫) ও মো. আল-আমিন আহমদ (১৮)।
পুলিশ কর্মকর্তা তৈমুর রহমান আরও বলেন, শাহাদাত হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, মূলত জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শাহাদাতকে খুন করা হয়। এ হত্যায় মোট পাঁচজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে হৃদয়সহ দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
অতিরিক্ত উপকমিশনার বলেন, শাহাদাতের বাবার সঙ্গে বিপুল নামে এক প্রবাসীর বাবার নোয়াখালীতে জমি সংক্রান্ত মামলা আছে। বিপুল বিদেশে থাকেন। এ মামলার জের ধরে শাহাদাতকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়। হত্যার এই দায়িত্ব দেওয়া হয় মোফাজ্জলকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শাহাদাতকে হত্যার জন্য হৃদয়ের সঙ্গে দুই লাখ টাকার চুক্তি করা হয়।
‘টাকায় খুনের চুক্তির কথা হৃদয় স্বীকার করেছেন। তিনি মূলত মিরপুরের ডন হতে চেয়েছিলেন। সেজন্য চুক্তিতে খুনের পরিকল্পনা করেন। যাতে, তিনি আলোচনায় আসতে পারেন’, যোগ করেন তৈমুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রথমে হৃদয়কে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে মোবাইল নম্বরের তথ্য বিশ্লেষণ করে হৃদয়ের নম্বর পাওয়া যায়। ঘটনার পর হৃদয় ঢাকা থেকে চাঁদপুরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে যান ভোলা। পরবর্তীতে ভোলা থেকেও সরে চলে যান ঝালকাঠি। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় বিদেশে থাকা বিপুলের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।