রংপুরে যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ
রংপুরের বদরগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে শাশুড়ি, স্বামী ও ননদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিন দিন আগে ওই গৃহবধুর চাচা মশিউর রহমান বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পুলিশ এখনও বিষয়টি আমলে নিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফের মেয়ে মোসাম্মৎ হিমু আক্তারের সঙ্গে আড়াই বছর আগে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের পাঠানের হাট উত্তর বালাপাড়া এলাকার সাদিকুল ইসলামের ছেলে শাহাদাত হোসেনের। বিয়ের কিছুদিন পরই হিমুকে তাঁর শাশুড়ি শাহনাজ বেগম ও স্বামী শাহাদাত হোসেন এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন। পরে ২০২১ সালের ৫মে হিমুকে টাকার জন্য নির্যাতন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে হিমুকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্বজনরা। চিকিৎসা শেষে বাবার বাড়িতে হিমু অবস্থান করাকালীন সময় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মুরুব্বিরা বিষয়টি মীমাংসায় এগিয়ে আসেন। এ সময় যৌতুকের জন্য আর চাপ দেবে না প্রতিশ্রুতি দিয়ে হিমুকে তার স্বামী ও শাশুড়ি বাড়িতে নিয়ে যান। পরে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
নির্যাতিতা গৃহবধূ বলেন, ‘আমার দুবছর বয়সী মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে শাশুড়ি, স্বামী এবং ননদের সব অত্যাচার সহ্য করে আসছিলাম। কিন্তু, গত ২৯ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে স্বামী শাহাদত হোসেন কাজের জন্য বাড়ির বাইরে গেলে আমি সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে যাই। পরে আমার শাশুড়ি ও ননদ খুন্তি গরম করে ঘুমন্ত অবস্থায় স্পর্শকাতর স্থানে ছ্যাকা দেন। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকিও দেন। পরে সন্তানকে নিয়ে খালার বাড়িতে পালিয়ে এসে মোবাইল ফোনে আমার চাচা মশিউর রহমানকে ঘটনাটি জানাই। তিনি আমাকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে বদরগঞ্জ থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করার তিনদিন অতিক্রম করলেও এখন পর্যন্ত এফআইআর হিসেবে অভিযোগটি আমলে নেয়নি পুলিশ।’
অভিযোগকারী মশিউর রহমান বলেন, ‘গতকাল সোমবার ৩১ অক্টোবর রাত আটটার দিকে আমাদের দুই পরিবারকে থানায় ডেকে নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী জবানবন্দি শোনেন উপপরিদর্শক রেজওয়ান।’
এ ব্যাপারে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে গতকাল দুই পক্ষেরে সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। নিজেরা মীমাংসা করার জন্য আমার কাছ থেকে সময় নিয়েছে । ভুক্তভোগী চাইলে মামলা নেওয়া হবে।