রোহিঙ্গা সংকট : আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ওআইসি
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়েছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। এ ছাড়া রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলায় আন্তর্জাতিক আদালত—আইসিজেতে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মুসলিম দেশগুলোর এ জোট।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আজ সোমবার মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ প্রতিশ্রুতির কথা জানান সংস্থাটির রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ইউসেফ আলডোবেয়া।
এ সময় ওআইসির প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের গভীর প্রশংসা করে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ আখ্যা দেন। ভাসানচরের বিষয়ে বাংলাদেশের নেওয়া উদ্যোগেরও প্রশংসা করে তারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওআইসির প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে স্বাগত জানান এবং ভাসানচরের অবকাঠামোগত নির্মাণের বিষয়ে তাদের অবহিত করেন যা এখন প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
আবদুল মোমেন বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ওআইসির প্রতিনিধি দলকে তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার আহ্বান জানান। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা জানিয়ে বলেন, তিনি দেশটিকে রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান অর্থাৎ নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং তাদের স্বদেশে স্থায়ী প্রত্যাবাসনকে এ সমস্যার কার্যকর সমাধান বলে পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রতিমন্ত্রী ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ বজায় রাখার আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের জন্য ওআইসি মানবিক ফান্ড তৈরি করায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওআইসির সদস্য দেশগুলোর প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ওআইসির ফান্ড থেকে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার পাশে থাকতে সংস্থাটিকে আহ্বান জানান শাহরিয়ার আলম। এ সময় ওআইসিকে সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানান তিনি।
সফররত ওআইসির সহকারী মহাসচিব জানান, তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে একমত হয়েছেন।
এর আগে ওআইসির প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে তাদের সফর সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব স্থায়ীভাবে এই মানবিক সংকট নিরসনে ওআইসিকে অব্যাহত সহায়তার আহ্বান জানান।