শরীয়তপুরে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় কলেজছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের মামলায় মাসুদ ব্যাপারী (৩১) নামের একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আ. ছালাম খান এ রায় দেন। এ সময় আদালতের এজলাসে আসামি উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মির্জা হযরত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ ব্যাপারী জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র ইউনুছ ব্যাপারীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে এক কলেজছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে গত ২০১৯ সালের ৩০ জুন জাজিরা থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রী।’
আদালত সূত্র জানায়, ওই মামলায় ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মাসুদ ব্যাপারী ও শরীফ সরদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। আদালত ১০ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেন। ১৩ জন সাক্ষী এবং আটজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আজ বিচারক মাসুদ ব্যাপারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন এবং একইসঙ্গে শরীফ সরদারকে বেকসুর খালাস দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২০১৯ সালের ২৯ জুন রাতে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হন। ওই দিন বিকেলে মাসুদ তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কলেজছাত্রীকে বাড়িতে আসতে বলেন। ওই মেয়ে কাজ শেষ করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাসুদের বাড়িতে যান। সেখানে মাসুদের পরিবারের কাউকে না দেখে ওই ছাত্রী ফিরে আসার চেষ্টা করেন। তখন মাসুদ তাকে ঘরে আটকে ধর্ষণ করেন। পরে মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
মেয়েটি মাসুদের বাড়ি থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে ওই মহল্লার কয়েকজন নারী তাকে উদ্ধার করেন। পরের দিন জাজিরা থানায় মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রী। ১ জুলাই আদালতের মাধ্যমে মাসুদ ব্যাপারীকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আদালত শরীফ সরদারকে বেকসুর খালাস ও মাসুদ ব্যাপারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন এতে আমি খুশি হতে পারিনি। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করবে।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. কামরুজ্জামান (নজরুল) বলেন, ‘আসামিপক্ষ সংশ্লিষ্ট মামলার রায়ে সংক্ষুব্ধ ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। রায়ের বিপক্ষে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’