শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি : পাঁচ লাশ উদ্ধার, তদন্ত কমিটি গঠন
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্যাংকারের ধাক্কায় মুন্সীগঞ্জমুখী একটি লঞ্চডুবির ঘটনায় আরও চার নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ জনে। পাঁচ জনই নারী। তবে কতজন যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ গতকাল রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, লঞ্চডুবির কারণ জানতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি পাঁচ কার্য দিবসে রিপোর্ট দেবে।
শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্যাংকারের ধাক্কায় গতকাল এম এল ছাবিত আল হাসান নামের মুন্সীগঞ্জমুখী একটি লঞ্চ অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শীতলক্ষ্যা নদীর চরসৈয়দপুর এলাকার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়া সহকারী উপপরির্দশক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় ৬টার দিকে লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জের দিকে রওনা দেয়। সৈয়দপুর কয়লাঘাট চায়না ব্রিজের সামনে গেলে একটি ট্যাংকারের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ছাবিত আল হাসান নামের লঞ্চটি অর্ধশত যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়।
লঞ্চমালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল জানান, লঞ্চটি ৬টার কিছু সময় পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায়। পথে ঝড়ের কবলে পড়লে এটি দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়।
নারায়ণগঞ্জ নৌপুলিশ সুপার মীনা মাহমুদা জানান, দুর্ঘটনাটি শীতলক্ষ্যা নদীর চায়না ব্রিজসংলগ্ন স্থানে ঘটেছে।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি ও তড়িৎ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গতকাল বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ছাবিত আল হাসান প্রায় ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে মুন্সীগঞ্জ যাওয়ার পথে কয়লাঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রিমিয়ার সিমেন্টসংলগ্ন নদীতে এসকে ৩ কোস্টার জাহাজের আঘাতে ৬টা ১০ মিনিটে ডুবে যায়।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র দাস জানান, ১১ যাত্রীকে উদ্ধার করে তিনজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটজন সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে গেছে।
লঞ্চডুবি থেকে বেঁচে ফেরা এক যাত্রী দাবি করেন, অন্য দিন লঞ্চে ৫০ থেকে ৬০ জন যাত্রী থাকে। তবে গতকাল সন্ধ্যার ওই লঞ্চে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। লকডাউনের কারণে অনেকে মুন্সীগঞ্জের গ্রামে ফিরছিলেন।