শেবাচিম হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবজাতক ভাগনিকে দেখতে চাওয়ায় মামা ও খালুকে মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালটির নিরাপত্তার দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও হাসপাতালের স্টাফদের বিরুদ্ধে।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রকল্পে কর্মরত মেহেদী হাসান, আনসার সদস্য অভিষেক মজুমদার, কালাম মুন্সীসহ ছয়-সাত জন মিলে এই হামলা চালান বলে অভিযোগ। যদিও তারা দাবি করেছেন, মারধর নয় উল্টো রোগীর স্বজনেরা তাদেরকে মারধর করেছে বিধায় আটকে রাখা হয়।
আজ শনিবার বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা দুজনে কথা বলছিল। এরই মধ্যে হাসপাতালের স্টাফ ও আনসার সদস্যেরা মিলে দুজনকে মারধর করে আটকে রাখে।
হামলার শিকার রোগীর স্বজন আশরাফুল হক মুন্না বলেন, ‘আমার ভায়রার নবজাতকের নাভিতে সমস্যা হওয়ায় স্বরূপকাঠি থেকে বরিশালে রেফার্ড করা হয়। দুপুর ৩টার দিকে তারা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করান। আমি ও আমার শ্যালক রাসেল সাড়ে ৪টার দিকে নবজাতক ওয়ার্ডের সামনে এসে দাঁড়াই। আমি ওয়ার্ডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোককে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাইরে বের করে দেন। আমি তাকে এও বলি যে, ভাই ভুল হয়েছে হয়তো আমি হাসপাতালের নিয়ম জানি না। কিন্তু সেই গার্ড আমার কোনো কথা না শুনে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আমাকে মারধর শুরু করেন। আমরা কোনো দোষ করিনি, তারপরও মাফ চেয়েছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা? মারধর করলো।’
মারধরের শিকার রাসেল হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভাগনি অসুস্থ হয়ে ভর্তি। আমার দুলাভাই তাকে দেখতে ভেতরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চাইলে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হাসপাতালের স্টাফ মেহেদী ও কয়েকজন আনসার সদস্য মারধর শুরু করেন। আমি মারধর ঠেকাতে গেলে স্টাফ মেহেদী ও আনসার সদস্যেরা আমাকেও মারধর করে আটকে রাখে। শুধু মারধর না, হামলাকারীরা বলেছেন আমাদের রোগীকে চিকিৎসা দেবেন না। আমরা আতঙ্কে আছি এই ঘটনায়। তারা ভর্তির কাগজ নিয়ে আটকে রেখেছে।’
ইউনিসেফ প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালে কর্মরত অভিযুক্ত মেহেদী হাসান বলেন, ‘নবজাতক ওয়ার্ডের গেটের কাছে আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন এসে দুজনে আমাকে ও ওয়ার্ডের ক্লিনারের ওপর হামলা চালায়। তারা হাসপাতালের স্টাফের গায়ে হাত তোলায় তাদের আটকে রাখা হয়েছে।’
অভিযুক্ত আনসার সদস্য অভিষেক মুজমদার বলেন, ‘হাসপাতালের স্টাফরা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের ওপর হামলা হয়েছে বিধায় রাসেল ও মুন্না নামে দুজনকে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তারা এখান থেকে তাদের রোগী নিয়ে যাবেন। অন্যথায় তাদের রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে না।’
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, ঘটনাটি পুরোপুরি জানেন না তিনি। খবর নিয়ে দেখছেন। হাসপাতালের কারও দোষ থাকলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।