সাড়ে ১৬ মাস পর শিক্ষার্থীর লাশ উত্তোলন
গাজীপুরে স্বামীর বাড়িতে মৃত্যুর প্রায় সাড়ে ১৬ মাস পর এক শিক্ষার্থীর লাশ পুনরায় তদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না রহমান জ্যোতির উপস্থিতিতে কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও বুরুজপাড়া গ্রামের বেপারীবাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি তোলা হয়।
নিহতের নাম তানজিনা ইসলাম টুম্পা (১৯)। তিনি ওই গ্রামের মঈনুল ইসলাম টিটুর মেয়ে।
গাজীপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, জেলার টঙ্গী পূর্ব থানাধীন আলম মার্কেট এলাকার নিজস্ব বাসায় বসবাস করতেন প্রবাসী মঈনুল ইসলামের পরিবার। ২০১৮ সালে তাঁর মেয়ে টুম্পা ভালবেসে স্থানীয় সাকিব মৃধাকে (২০) বিয়ে করেন। ২০২০ সালে সাহাজ উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। স্থানীয় নুরুল ইসলাম নুরু কাউন্সিলরের ভাগ্নে সাকিব এক গার্মেন্টসে চাকরি করেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে টুম্পাকে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই মারধর করত। নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে টুম্পা ২০১৯ সালে স্বামী সাকিবের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পিবিআই পরিদর্শক জানান, ২০২০ সালের ১৬ জুন স্বামীর বাড়িতে টুম্পার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা মমতাজ বেগম যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের মাধ্যমে টুম্পাকে হত্যার অভিযোগ করে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন। পুলিশ এ মামলায় সাকিবকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে টুম্পার মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত কারণে হয়েছে বলে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ওই মামলায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে এবং সাকিব কারাগার থেকে মুক্তি পায়। এতে আপত্তি জানিয়ে পুনরায় তদন্তের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে আবেদন করেন নিহতের মা। আদালত ওই আবেদন আমলে নিয়ে গত অক্টোবরে আদেশ দিয়ে পিবিআইকে দায়িত্ব দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ নিহতের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। রিপোর্ট হতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।