সুনামগঞ্জে করোনায় প্রথম মৃত্যু, গোসল ও দাফন করলেন স্বেচ্ছাসেবীরা
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম আবদুল হক (৫০)। তিনি ছাতকের রাউলী গ্রামের বাসিন্দা।
আবদুল হকের দাফনে এগিয়ে এসেছেন সুনামগঞ্জের তাক্বওয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাঁচ সদস্যসহ ১২ জন। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় সরকার স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে মৃতের দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়।
তাক্বওয়া স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশনের পাঁচ সদস্যের মধ্যে চারজন সহোদর। এর মধ্যে একজন হলেন সুনামগঞ্জ ব্যাডমিন্টন ক্লাবের সদস্য আম্মার আহমদ। বাকিরা হলেন মাওলানা আব্দুল বাছিরের ছেলে হাফেজ মাওলানা মিসবাহ উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা ত্বাহা হোসাইন, হাফেজ মাওলানা খিজির আহমদ ও হাফেজ মাওলানা হাম্মাদ হোসাইন।
সুনামগঞ্জ ব্যাডমিন্টন ক্লাবের সদস্য আম্মার আহমদ বলেন, ‘করোনা মহামারিতে মানুষ খুবই বিপদে আছে। এর মধ্যে খবরে শুনি করোনায় মারা যাওয়ার পরে আপন মানুষও লাশের কাছে আসে না। তাই আমি সেই প্রথম থেকে নিজেকে তৈরি করেছিলাম যে সুনামগঞ্জে যদি কেউ মারা যায় তা হলে নিজে গিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করব। এর আগে কখনো লাশ গোসল করাইনি। এবারই প্রথম লাশ গোসল করিয়েছি, দাফন করিয়েছি। খারাপ সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াব, এটাই বড় কথা। বাকিটা আল্লাহ জানেন।’
আম্মার আহমদ করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকেই হাওরে স্বেচ্ছায় ধান টাকা থেকে শুরু করে মানুষকে ত্রাণ সহায়তার কাজেও যুক্ত আছেন।
ছাতক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. গোলাম কবীর বলেন, ‘করোনায় ওষুধ ব্যবসায়ীর মৃত্যুর পর ছাতকের স্বেচ্ছাসেবী চার সহোদরসহ মৃতের ভাইও দাফন-কাফনে অংশগ্রহণ করেন। আমরা স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে দাফন কাজ সম্পন্ন করেছি। আমরা উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক নজরদারি করেছি।’
এর আগে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. রাজিব চক্রবর্তী জানান, জ্বর-সর্দিসহ করোনা উপসর্গ থাকায় গত ২৮ মে ওষুধ ব্যবসায়ী আবদুল হকের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং ওই দিনই তাঁকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা শেষে জানানো হয় তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আজ দুপুর ২টায় ওই হাসপাতালেই তিনি মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, সুনামগঞ্জে ১৬ জন র্যাব সদস্যসহ নতুন করে ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত বাকি পাঁচজনের মধ্যে ছাতক উপজেলায় দুজন, জগন্নাথপুরে একজন, সুনামগঞ্জ সদরে একজন ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় একজন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. শামছুদ্দিন আহমদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।