৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আবু তারাকে যৌতুকের জন্য পিটিয়ে ও গলায় রশি ঝুলিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটে। ২০০০ সালে ঘটা এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালত তাঁর স্বামী আব্দুল কাদের ওরফে গাঁজা কাদেরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। গতকাল শনিবার ফেনী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আজ রোববার র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০৯০ সালের ২৩ অক্টোবর ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম পাঠানগড় গ্রামের আবদুল কাদেরের সঙ্গে একই এলাকার মোহম্মদ আলীর মেয়ে আবু তারার বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের পরিবারে এক পুত্র সন্তান ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আবদুল কাদের মাদকাসক্ত ছিলেন। মাদক সেবনের জন্য বিয়ের পর থেকে প্রায় সময়ই আবু তারার কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করতেন আবদুল কাদের। এবং টাকা না পেলে প্রায়ই অমানবিক নির্যাতন করতেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এভাবে চলতে থাকে। ২০০০ সালের ২৩ জুলাই রাতে আবদুল কাদের ওরফে গাঁজা কাদের তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আবু তারাকে মেরে ফেলার জন্য পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী রাতে তার দুই সন্তানকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আগেই অচেতন করে রাখেন। সারা রাত তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে নির্মম ও নৃশংসভাবে গলা চেপে হত্যা করেন কাদের। পরবর্তীতে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য তিনি নিহত স্ত্রীকে ঘরের পাশে একটি গাছের সঙ্গে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন। এবং আশপাশের লোকজনকে বলতে থাকেন, তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীর বাবা মোহম্মদ আলী বাদী হয়ে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানায় ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর প্রধান আসামি আব্দুল কাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় পলাতক থাকেন। দীর্ঘ সাত বছর পলাতক থাকার পর পরবর্তীতে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার হন। পরে তিন বছর জেল হাজতে ছিলেন। জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে কাদের আবার লাপাত্তা হয়ে যায় বলে দাবি করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে আদালত মামলার প্রধান আসামি পলাতক থাকা আব্দুল কাদের ওরফে গাঁজা কাদেরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ঘটনাটি র্যাব-৭ অত্যন্ত গুরুত্বের সহিত আমলে নিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানাধীন পাঠানগড় কাচারি বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।