শেষের পথে সুন্দরবনের কুমিরশুমারি
সুন্দরবনে কুমিরশুমারি প্রায় শেষের দিকে। চলতি মাসেই এটি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে জানা যাবে, সুন্দরবনে কুমিরের প্রকৃত সংখ্যা। বন বিভাগের সহযোগিতায় ‘ক্যারিনাম’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা সমীক্ষা পরিচালনা করছে।
সমীক্ষা পরিচালনাকারীরা ১০ জন করে দলে বিভক্ত হয়ে সুন্দরবনের নদী ও খালে নৌযানে ঘুরে কুমির গণনা করেন। ২০১৪-এর ৭ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনের ছোট-বড় ৪৫০টি নদী ও খালে কুমির গণনা করা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেন বলেন, সমীক্ষার ফলাফলে স্থানভেদে কুমিরের সংখ্যা এবং বনের প্রতি কিলোমিটারে কুমিরের ঘনত্বসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা যাবে।
পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, এলাকাভেদে কুমিরের সংখ্যা জানা গেলে তা প্রাণীটির সংরক্ষণের জন্য সহায়ক হবে। এ ছাড়া কুমিরের বংশবিস্তার বা জীবনযাত্রার হুমকিগুলো শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে বন বিভাগ। তিনি জানান, একেকটি স্ত্রী কুমির বছরে ৬০-৭০টি ডিম পাড়ে। সুন্দরবনের গুইসাপ, শূকরসহ অন্যান্য বন্য প্রাণী এই ডিম খেয়ে ফেলে, যে কারণে এর প্রজনন বিঘ্নিত হয়।
লবণপানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ‘সুন্দরবনসহ বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন’ প্রকল্পের আওতায় ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে আট একর জমির ওপর বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র। ওই বছর সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে জেলেদের জালে আটকে পড়া ছোট-বড় পাঁচটি লোনাপানির কুমির আনা হয় করমজল বন্য প্রাণী ও কুমির প্রজনন কেন্দ্রে।
করমজল বন্য প্রাণী ও কুমির প্রজনন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার ফরেস্টার আজাদ কবির জানান, সর্বশেষ ২০০৪ সালের গণনা অনুসারে সুন্দরবনে ১৫০-এর কাছাকাছি কুমির ছিল। আর করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ২২১টি কুমির রয়েছে। এ ছাড়া গত ১২ ও ২৮ মে এই কেন্দ্রের কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল ৫০টি ও ৬১টি ডিম দিয়েছে।