‘টাকা না দিলে কীভাবে উদ্বোধন হবে?’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ঝাড়পাড়া এলাকায় সরকারি অর্থায়নে পল্লী বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হয় ২০১১ সাল থেকে। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও গ্রাহকরা পাননি বিদ্যুৎ সংযোগ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের চাঁদা না দেওয়ায় তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পল্লী বিদ্যুতের মিটার নেওয়ার জন্য জামানত বাবদ ৬৫০ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু ৯৪ জন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য ২০১১ সালে মিটার বাবদ সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা করে নেন ঝাড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সুরেন চন্দ্র ও পল্লী বিদ্যুতের ওয়ারিং মিস্ত্রি মশিউর রহমান।
এর পর দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ওয়ারিং ও পোল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যের (এমপি) মাধ্যমে বিদ্যুৎ লাইন উদ্বোধনের কথা বলে আবারও গ্রাহকপ্রতি এক হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শবীন্দ্রনাথ, আশারু বর্মণ, নুরুল ইসলাম ও নুরুল আমিন নামের সদর উপজেলার রায়পুর ঝাড়পাড়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১১ সাল থেকে বিদ্যুতের জন্য টাকা দিচ্ছেন তাঁরা। এখন লাইন নির্মাণ হয়েছে। ইউপি সদস্য সুরেনের সঙ্গে আগে তিন হাজার করে টাকা চুক্তি হয়েছিল। সেই টাকা গ্রাহকরা দিয়েছেন। তবে যাঁরা টাকা কম দিয়েছেন, তাঁদের ওয়ারিং করা হয়নি। এখন উদ্বোধন খরচের জন্য প্রতি গ্রাহকের কাছে সুরেন আবার এক হাজার করে টাকা চেয়েছেন। টাকা না দিলে উদ্বোধন হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
পল্লী বিদ্যুতের আরেক গ্রাহক মতি রানী জানান, আর কত টাকা দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে, তা কেউ জানে না। উদ্বোধনের জন্য এক হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। সরকার সব সুবিধা দিলেও স্থানীয় ইউপি সদস্য কেন টাকা নিচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সুরেন বলেন, ‘৯৪টি মিটারের জন্য লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। গ্রাহকদের কাছে ৫০০ টাকা করে নিয়ে বিদ্যুৎ লাইন এমপির হাতে উদ্বোধন করব। টাকা না দিলে কীভাবে উদ্বোধন হবে?’
গ্রাহকপ্রতি সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগের জবাবে সুরেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পল্লী বিদ্যুতের ওয়ারিংম্যান মশিউর রহমানের সঙ্গে আমার যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। আমি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা তুলে মশিউরকে দিছি। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের আঞ্চলিক পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী রাজুকে কিছু সম্মানী দিতে হয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক ইনছার আলী বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি।’