জেলেদের চাল নিয়ে মেম্বারের চালবাজি
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নে আজ শনিবার ভিজিএফের চাল বিতরণের সময়েই জেলেরা অনিয়মের অভিযোগ করেন। পরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ৪ নম্বর পূর্ব খোন্তাকাটা ওয়ার্ডের ৯০ জন জেলের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। এর তদারকি করেন ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন। প্রতি জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসে মোট ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়ার কথা। কিন্তু ইউপি সদস্য জাকিরের নির্দেশে প্রত্যেককে ২০ কেজি করে কম চাল দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন জেলেরা। জাটকা (বাচ্চা ইলিশ) মৌসুমে জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকায় সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এই বিশেষ বরাদ্দ পান।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতি’র জেলা সভাপতি মো. কামাল হোসেন বয়াতী অনিয়মের প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্য জাকির হোসেন তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ করেন জেলে সুলতান শিকারী, মিজান তালুকদার ও সিরাজ মিয়া। তাঁরা এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁদের দুই মাসের চাল একসঙ্গে ৮০ কেজি দেওয়ার কথা। কিন্তু ৮০ কেজি বলে তাঁদের যে চাল দেওয়া হয়েছে, তা পাল্লায় মেপে পাওয়া গেছে ৬০ কেজি। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৬০ কেজি করেই চাল দেওয়া হবে।
ইউপি সদস্য জাকির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যেককে পাঁচ বালতি করে চাল দিতে বলেছেন। তাতে যা হবে তাই নিতে হবে।’
ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান খান ঘটনার সময় বাগেরহাটে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সভায় ছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘মিটিংয়ে থাকায় অনিয়মের বিষয়ে সঠিক কিছু বলতে পারব না। তবে ৭০ কেজি করে চাল দেওয়ার জন্য আমি মেম্বারকে বলেছিলাম। তারপরও কেন কম দেওয়া হয়েছে তা আমি দেখব।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খোন্দকার সহিদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘চাল বিতরণের বিষয়ে আমাকে এবং তদারকি কর্মকর্তাকে কিছু জানানো হয়নি। অনিয়মের খবর পেয়ে পরিষদে গিয়ে দেখতে পাই, প্রত্যেককে ৮০ কেজির স্থলে ৬০-৬৫ কেজি করে দেওয়া হয়েছে।’
পরে প্রত্যেক জেলেকে আরো ১০ কেজি করে দেওয়ার জন্য ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে বলা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে বলে জানান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।