নান্দাইলে একই পরিবারের চারজনসহ পাঁচ খুন
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে উপজেলার বাঁশাটি গ্রামে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
urgentPhoto
নিহতরা হলেন ওই গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ বিল্লাল হোসেন, তাঁর তিন ছেলে ফরিদ, পাভেল ও হিমেল।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে’। তিনি বলেন, বিল্লালের আপন ভাই লাল মিয়া ও তার ছেলে কামাল ও জামাল জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুনীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে বলে জানান এসপি।
এদিকে হামলাকার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন জামালও খুন হয়েছেন। রাতেই ঘটনাস্থলের পাশে পুকুরের পাড় থেকে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। তবে কারা তাঁকে হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, প্রথমে বিল্লাল হোসেনের ছেলে ফরিদকে রাস্তায় এবং বাড়িতে ভাত খাওয়া অবস্থায় বিল্লাল হোসেন ও তার ছেলে পাভেলকে হত্যা করে পতিপক্ষ। ঘটনা দেখে জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালানোর সময় পিছু ধাওয়া করে হত্যা করে বিল্লাল হোসেনের আরেক ছেলে হিমেলকে। আপন ভাই ও তাঁর ছেলেদের হত্যার জন্য লাল মিয়া ও তাঁর ছেলেদের ফাঁসি চাইলেন ক্ষুব্ধ এই গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে বিল্লাল হোসেনের প্রতিবেশী বলেন, ‘তারার মধ্যে দিনের বেলায় একটু মারামারি হইছে। মারামারি হইলে হাসপাতালে গেছে , আইছে। সন্ধ্যার পরে একটু চিক্কার-টিক্কার হুনছি। দৌরাইয়া আইছি, আইয়া দেখি এইখানে লাশ পইরা রইছে। লাশ পইরা থাকতে দেইখ্যা ওইহানো গিয়া খারাইছি। একটু পরে বারিত (বাড়ি) থাইক্যা খবর আসছে যে হেনো আরো তিনডা পইরা রইছে। দৌরাইয়া বারিত গিয়া দেখি যে বেলাল ভাই ও বেলাল ভাইয়ের এক ছেরা দুইজন পইরা রইছে। হেদিকদিয়া আরেকজন চিল্লাইতাছে, যেই ওই রাস্তার মইধ্যে আরেকটা। হেনো গেছি , গিয়া দেখি হিমেল নামের আরেকটা ছেরা পইরা রইছে। এই রমভাবে এক পরিবারের চাইর জুন মানুষ নির্মম ভাবে হত্যা অইছে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেইকা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসি চাই।’
হামলায় বিল্লাল হোসেনের স্ত্রীও গুরুতর আহত হন। তাঁকে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই খুনিরা পলাতক রয়েছে। ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খুনিদের আটকের নির্দেশ দিয়েছেন এসপি মইনুল হক। এর পর পরই অভিযুক্ত লাল মিয়া ও তার সহযোগীদের আটক করতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ইশ্বরগঞ্জসহ আশপাশের পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে।
এ বিষয়ে গৌরীপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আকতারুজ্জামান বলেন, ‘এটা নিজস্ব ফ্যামেলিগত ব্যাপার। বড় ভাইরে নাকি ছোট ভাই মেরে ফেলছে, খুন করছে। বড় ভাই ও আরো তিন জনসহ মোট চারজনকে মেরে ফেলছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খুব তৎপরতা চালাচ্ছি। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের খুব তাড়াতাড়ি অ্যারেস্ট করার জন্য।’