নাগরিকত্ব পেতে ছিটমহলে বিপুল উৎসাহ
লাঠি হাতে ঠুক ঠুক করতে করতে বাড়ির উঠান পার হচ্ছেন এক বৃদ্ধ। উদ্দেশ্য বাড়ির পাশে গাছের ছায়ায় বসা ছিটমহলে অস্থায়ী ক্যাম্পে যৌথজরিপ দলের কাছে যাওয়া। জীবনের দ্বারপ্রান্তে এসে নিজের নাগরিকত্বটুকু নিশ্চিত করতে চান এ বৃদ্ধ।
এ চিত্র আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার মধ্যে থাকা ১১৯ নম্বর ভারতীয় বাঁশকাটা ছিটমহলের।
ছিটমহলের তথ্য নিতে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারতের ১০ দিনের যৌথ জরিপ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার।
শুধু ওই বৃদ্ধই নন, নাগরিকত্ব গ্রহণসহ ২০১১ সালের জনগণনার পর ছিটমহলে জন্ম নেওয়া শিশু, মৃত্যু ও বিয়ে সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য দিতে ক্যাম্প এলাকায় উপচে পড়া ভিড় এখানকার অধিবাসীদের। তাঁরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে জরিপ দলের কাছে তাঁদের তথ্য দিচ্ছেন।
এ জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও সদর উপজেলায় ভারতীয় ছিটমহলের সংখ্যা ৫৯টি। এর মধ্যে ১৭টিতে নেই কোনো জনবসতি।
গতকাল সোমবার ভারত ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহলে যৌথ জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত যৌথ জনগণনার তথ্যকে ভিত্তি করেই এবারের জরিপ চলছে। ওই জনগণনার পর ছিটমহলে কারো বিয়ে হয়েছে কি না, কেউ মারা গেছে কি না, কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে কি না এসব তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা এসব ছিটমহলের বাসিন্দারা কোন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করবে, সেই তথ্য সংগ্রহ করছেন জরিপকারীরা। নাগরিকত্ব নিয়ে কেউ ভারতে যেতে চাইলে তাঁর ছবিও তুলে নিচ্ছেন তাঁরা।
এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর কুতুবুল আলম এনটিভি অনলাইনকে জানান, আজ দুপুরে জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ১৬ সদস্যের একটি ভারতীয় পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে এসেছে। তারা ১১২ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহল, ভোটবাড়ী, লতামারীসহ বিভিন্ন ছিটমহলে জরিপ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে। পরে আজ সন্ধ্যায় ভারতে ফিরে যাবে। কাল বুধবার বাংলাদেশ থেকে একটি দল ভারতে গিয়ে সেখানকার ছিটমহলে যৌথ জরিপ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।