সেই ডাকাতি ও ধর্ষণে ছাত্রলীগ নেতাও জড়িত
যশোরে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি বাড়িতে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তরিকুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি নিজে, যশোর জেলা ছাত্রলীগের উপপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বিল্লাল হোসেনসহ মোট আটজন ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া অপর আসামি ছাত্রলীগ নেতা বিল্লাল কোনো জবানবন্দি দেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতেও (রিমান্ড) নেয়নি। পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি মামলার আসামি যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ইলিয়াস সাজু বাদশাসহ ছয়জনকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ গণি মিয়া জানান, স্থানীয় সন্ত্রাসী তরিকুল ইসলাম গতকাল সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। সেই সঙ্গে তিনিসহ মামলার আট আসামিই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জবানবন্দিতে জানান।
ওসি আরো বলেন, ‘এ মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এ দিকে ঘটনা জানার পর স্পন্দন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাদের ফটোসাংবাদিক ইলিয়াস সাজু বাদশাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। একই সাথে যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যপদ থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করে সংগঠনটি।
এ দিকে ওই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতার জড়িত থাকার বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, 'আমরা এ রকম একটা ঘটনা শুনেছি। ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি গ্রেপ্তারও হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি যদি সত্যিই জড়িত হয়ে থাকেন, আমরা অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
গত শুক্রবার যশোর শহরের একটি বাসায় ঢুকে ডাকাতি করে একদল যুবক। সে সময় তারা ওই বাসার এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে বাসার গৃহকর্তার সাথে ওই কিশোরীর বিবস্ত্র ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এ ছাড়া বাসার গৃহকর্ত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে।
এসব অভিযোগ এনে শনিবার যশোর কোতোয়ালি থানায় আটজনকে আসামি করে মামলা করেন ওই বাসার গৃহকর্ত্রী। ওই দিন রাতেই মামলার দুই আসামি শহরের আর এন রোড এলাকার তরিকুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ নেতা বিল্লালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে মামলার অন্য আসামি শহরের নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়া এলাকার ইব্রাহিম ওরফে টাক ইব্রাহিম, ফটোসাংবাদিক ইলিয়াস সাজু বাদশা, আর এন রোড এলাকার সাইদুল, লাকু বিশ্বাস, রানা ও সোহরাব পলাতক বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার আক্কাস।
এরই মধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ওই কিশোরীর প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আলমগীর কবীর। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, কিশোরীর শরীর থেকে আলামত সংগ্রহ করে তা যশোর মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন এলে বিস্তারিত বলা যাবে।