রাজনের খুনিরা কঠিন শাস্তি পাবে : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সিলেটে শিশু রাজন হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। সেই সঙ্গে নির্যাতনের সময় যারা থানায় যোগাযোগ না করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বর্বরোচিত দৃশ্যটি দেখেছে তারাও এ হত্যার দায় এড়াতে পারে না। এ বিষয়টিও তদন্তে আনা হবে।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিছক চুরির অপরাধে শিশু রাজনকে হত্যা করা হয়েছে, নাকি হত্যার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। আর যে কারণেই হোক এই হত্যার সাথে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কাউকে ছাড় দিব না। যার নামই আসুক তাকেই আমরা ধরব। যুবলীগ হোক, ছাত্রলীগ হোক, আওয়ামী লীগ হোক যেই হোক তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমরা নিব।
রাজনের হত্যাকাণ্ড অনাকাঙ্ক্ষিত, দুঃখজনক ও বর্বরোচিত ঘটনা উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘একটি বাচ্চা ছেলেকে এ ধরনের বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করা কারো জন্য কাম্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘ছেলেটি দুষ্কর্ম করতেই পারে। সেটার জন্য এ রকমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা সত্যি হৃদয়বিদারক। আমাদের পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে আটক করেছে এবং রিমান্ডেও নিয়ে আসছে।’
‘যদি কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে পিটিয়ে থাকে তাহলে সাজা পেতেই হবে। আর যদি নেহায়েত দুর্ঘটনার কথা হয়, গণপিটুনির কথা হয়, তাহলে কারা পেটাল, কারা এ রকম একটা ছোট শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করল এটা আমরা খুঁজে বের করব। তাদের যথাযোগ্য শাস্তির ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই করব। এভাবে পেটাতে পারে না কেউ। থানা পুলিশ আছে। সেখানে দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেখছিল তাদেরও উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে থানাকে অবহিত করা। সবাই এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখেছেন এটা আমার কাছে অস্বাভাবিক লেগেছে। তাদের উচিত ছিল পুলিশে খবর দেওয়া। তারা কেন সেই কাজটি করেনি তাও তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্ত করে যারা দোষী তারা তো অবশ্যই এবং এ ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে তার জন্য আমরা একটা ব্যবস্থা করব।’
গত ৮ জুলাই সকালে সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে চোর সন্দেহে শেখ সামিউল আলম রাজনকে (১৩) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করে সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিত আলমকে। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মুহিত, তাঁর ভাই কামরুল ইসলাম, আলী হায়দার ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মুহিত শিশুটিকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র মুঠোফোনে ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ২৮ মিনিটের সেই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।
এজাহারভুক্ত তিন নম্বর আসামি কামরুল ইসলাম গত ১০ জুলাই দুপুর ২টায় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশে দেশ ছেড়ে যান।