হাওরে ফসলহানির ঘটনায় মামলা, তদন্তের নির্দেশ
হাওরে হাজার কোটি টাকার ফসলহানির ঘটনায় সুনামগঞ্জের একটি আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৫ কর্মকর্তা, ৪৬ জন ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির পিআইসি ৭৮ জনসহ ১৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মামলাটি করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হক। বাদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন শহীদুজ্জামান চৌধুরী। এ সময় আদালতে সমিতির শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, মামলায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। সচিবের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৫(এ) ধারার অভিযাগ আনা হয়েছে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, ত্রাণ সচিব ফসলহানির ঘটনার পর ১৯ এপ্রিল সুনামগঞ্জে এসে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি সভা করেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নামে একটা আইন আছে। এই আইনের ২২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো এলাকার অর্ধেকের ওপরে জনসংখ্যা মরে যাওয়ার পর ওই এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হয়। না জেনে যারা এমন সস্তা দাবি জানায়, তাদের কোনো প্রকার জ্ঞানই নেই।’ ত্রাণ সচিব অবজ্ঞার সুরে আরো বলেন, ‘কিসের দুর্গত এলাকা, একটি ছাগলও তো মারা যায়নি।’
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন গত ২ জুলাই সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় পাউবোর ১৫ কর্মকর্তা ও ৪৬ ঠিকাদারকে আসামি করে দুর্নীতির অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমদ। ওই দিনই দুদক পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দিন ও বাঁধের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইব্রাহিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. বাচ্চু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এ দুজন এখন জেলহাজতে আছেন।
সুনামগঞ্জে গত এপ্রিল মাসের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৪২টি হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। ২৭ মার্চ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জে একের পর এক হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এতে তিন লাখ ২৫ হাজার ৯৯০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন।