রোহিঙ্গা মা মেয়ের নাম রাখলেন শেখ হাসিনা
বহু বিপদ সংকুল পথ পাড়ি দিয়ে মা আলম বাহারের সঙ্গে যখন বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করেন তখন আট মাসের সন্তান তাঁর গর্ভে। এর আগে তাঁর ঘর ছিল, সংসার ছিল, স্বপ্ন ছিল। সবেচেয়ে বড় কথা ছিল একটা পরিচয়। আর বাংলাদেশে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই সেই পরিচয় হারিয়ে গেল রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিচয়ের আড়ালে।
বলছি মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বাসিন্দা খাদিজার কথা। সম্প্রতি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। আর এর মাধ্যমেই সবার নজর কেড়েছেন। কারণ নিজের মেয়ের নাম তিনি রেখেছেন শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে খাদিজা ও শেখ হাসিনার কথা জানানো হয়েছে।
মেয়ের নাম সম্পর্কে নীল-কালো রঙের বোরকায় আবৃত খাদিজা বলেন, ‘পুরো রাখাইন রাজ্য জ্বলছে। আমার বাড়ি পুড়ে গেছে। শুধু আমার গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুটাকে বাঁচিয়ে রাখব বলে বহু কষ্ট করে আমি মিয়ানমার থেকে পালিয়েছি। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। আমি এখানে এসে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়েছি। এই হামলায় আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। মেয়ের নাম দিয়েছি শেখ হাসিনা।’
খাদিজা জানালেন, মেয়ের নাম শেখ হাসিনা রাখার একটাই কারণ। আর সেটা হলো গোটা বিশ্বকে জানানো যে, এই শিশু শেখ হাসিনা জন্ম নিতে পেরেছে এবং বেঁচে আছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক সহায়তার কারণে।
বাংলাদেশে থাকা আট হাজার অন্তঃসত্ত্বা রোহিঙ্গা শরণার্থীর মধ্যে খাদিজাও একজন। ছয় সদস্যের পরিবারের মধ্যে কেবল খাদিজা আর তাঁর মা-ই বেঁচে আছেন।
ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে কথা বলার সময় শেখ হাসিনাকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছিলেন খাদিজা। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর মা আলম বাহার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আসতে আমাদের বহু যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। আমার মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা ছিল। সে এখানে এসে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। আমরা তার নাম রেখেছি শেখ হাসিনা। কারণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জীবনে আশার আলো দিয়েছেন। তাঁর জন্য আমরা জীবনে একটু শান্তির আশা করতে পারছি।’
রাখাইন রাজ্যের সহিংসতায় স্বামী হারিয়েছেন আলম বাহার। একই হামলায় নিজের স্বামী ফখরউদ্দিনকে মারা যেতে দেখেছেন খাদিজা। তবে তারপরও খাদিজা বিশ্বাস করেন তাঁর স্বামী কোথাও না কোথাও বেঁচে আছেন।