বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে : আইজিপি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক আজ বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন। তিনি বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা তাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে ইন্টারপোলকে জানাব।’
আগামী ১৫ আগস্ট জাতি বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী পালনকে সামনে রেখে আইজিপি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ১২ খুনির মধ্যে ছয়জনের অবস্থান জানতে এবং তাদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা ইন্টারপোলের সহায়তা চাইব। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’
শহীদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের মধ্যে সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নূর চৌধুরী কানাডায় এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
ছয় ঘাতককে ফিরিয়ে আনতে আইনগত ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। যেখানেই থাকুক সেখান থেকে তাঁদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোতে খুনিদের ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছে সরকার।
আইজিপি আরো বলেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত একটি টাস্কফোর্স এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে, যাতে খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা যায়।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী খুনিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন।
অন্য খুনিরা হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজ পাশা।
পুলিশ ও কর্মকর্তারা এর আগে জানিয়েছিলেন, এসব খুনি গ্রেপ্তার এড়াতে এক দেশ থেকে আরেক দেশে পালিয়ে তাঁদের অবস্থান পরিবর্তন করছেন।
১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে ইন্টারপোলের মাধ্যমে খুনিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নবায়ন করে সরকার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে বর্বরোচিত হত্যার দায়ে সেনাবাহিনীর সাবেক ১২ জন অফিসারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এঁদের মধ্যে পাঁচজনকে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসি দেওয়া হয়। এঁরা হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি), শাহরিয়ার রশিদ খান, এ কে এম মহিউদ্দিন (ল্যান্সার) ও মেজর বজলুল হুদা।
বজলুল হুদাকে ব্যাংকক থেকে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা হয়।