ঘুষসহ প্রকৌশলীকে আটকের দাবি
চুয়াডাঙ্গায় ঘুষের টাকাসহ এক প্রকৌশলীকে আটকের দাবি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। আজ বুধবার বিকেলে জেলা শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়ায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে ওই প্রকৌশলীকে পুলিশের সহযোগিতায় আটক করা হয়।
আটক মাহমুদ আলম (৪৭) স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া ছয়রাস্তা মোড় এলাকার বাসিন্দা। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ঘুষের ৪৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
আটকের পর মাহমুদের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. আব্দুল গাফফার বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা এবং ১৯৮৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রকৌশলী মাহমুদ আলমকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
তবে এ ব্যাপারে প্রকৌশলী মাহমুদ আলমের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালের বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম এম কামাল এন্টারপ্রাইজসহ আরো ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশপ্রাপ্ত হয়। তাঁদের পক্ষে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর মৃত আইয়ুব আলী মণ্ডলের ছেলে ঠিকাদার খাইরুল ইসলাম স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৪৩ লাখ ১৫ হাজার ৮৫০ টাকার সরকারি কাজ সম্পন্ন করেছেন।
এদিকে ছয়টি কাজের নিরাপত্তা জামানতের টাকা ফেরত চাইলে প্রকৌশলী মাহমুদ আলম দুই লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। গত ১৫ জুলাই ওই ঠিকাদার বাধ্য হয়ে ঝিনাইদহের ঠিকাদার ইমারত আলীর সামনে এক লাখ টাকা ঘুষ দেন। কিন্তু ঘুষের টাকা নিয়েও জামানতের টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেননি প্রকোশলী। এরপর গত ৭ আগস্ট আরো এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করলে সেই টাকা দেওয়ার জন্য আজ বুধবার দিন ঠিক করা হয়।
এদিকে ঠিকাদার খাইরুল ইসলাম প্রকৌশলীর ঘুষ দাবির বিষয়টি দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককে জানান এবং সেখানে লিখিত অভিযোগ করেন।
উপপরিচালক মো. আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল অভিযুক্ত প্রকৌশলীকে হাতেনাতে ধরতে আজ বুধবার দুপুর থেকে ফাঁদ পাতে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, খাইরুল ইসলাম দুদক উপপরিচালকের সামনেই ৫০ হাজার টাকা (এক হাজার টাকার ৫০টি নোট) প্রকৌশলী মাহমুদ আলমকে প্রদান করেন। পরে ঠিকাদারকে আপ্যায়নের জন্য কার্যালয়ের বিশ্রামাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় দুদক উপপরিচালক অন্যান্য সহকর্মীদের ডেকে নিয়ে ওই প্রকৌশলীকে আটক করেন। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৪৮টি ১০০০ হাজার নোট উদ্ধার করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদার ইমারত আলী জানান, প্রকৌশলী মাহমুদ আলম সব ঠিকাদারকেই এভাবে জিম্মি করে দিনের পর দিন ঘুষ আদায় করেন। ঠিকাদার খাইরুল ইসলামের কাছ থেকে তাঁর সামনেই গত ১৭ জুলাই এক লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন তিনি।