গুলিবর্ষণকারী যুবক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা
জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া শেষে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত গুলি চালানোরত ছবির যুবকের পরিচয় মিলেছে। তিনি পুলিশের বরখাস্ত হওয়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনিচুর রহমান ওরফে আনিচ।
urgentPhoto
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, ওই যুবকের নাম আনিচুর রহমান আনিচ। তিনি পুলিশ সদস্য; কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঢাকা-ঝালুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় দেড় বছর আগে ঢাকার কাফরুল থানায় কর্মরত অবস্থায় দুর্নীতির কারণে বরখাস্ত হন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান। এর পর থেকে তিনি নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তা আনিচ আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মোমিজের আত্মীয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল খালেক জানান, গতকাল শনিবার কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সবুজের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা করা হয়নি ।
এদিকে, আজ রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) একরাম উল হাবিব। তবে তিনি প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য শুনতে চাইলেও স্থানীয়রা কেউ মুখ খোলেনি।
সংঘর্ষে ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে পুলিশের এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশের হাতে ক্লু রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, অতিদ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করবে। পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, আমরা বিষয়টি দেখব। সে যেই হোক, গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল রেজা জানান, আজ ভোরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সবুজের লাইসেন্স করা একটি শর্টগান ৫৬টি গুলিসহ জব্দ করেছে পুলিশ।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার মোহিনী মিল গেট থেকে জাতীয় শোক দিবসের মিছিল বের হয়। মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে মজমপুর গেটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা। ফেরার সময় হঠাৎ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সবুজের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের মধ্যে কয়েকটি গুলির ঘটনাও ঘটে।
সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত তিনজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দুপুর ১টার দিকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে মারা যান স্থানীয় যুবলীগকর্মী সবুজ।