মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ, হাসপাতালের কর্মীদের মারধর
বরগুনা সদর হাসপাতালের এক রোগীকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ করার অভিযোগ এনে তাঁর স্বজনেরা হাসপাতালের চার নার্স ও দুই কর্মচারীকে মারধর করেছে। এই অভিযোগে রোগীর সাত স্বজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ইকবাল, মিরাজ, সালাহউদ্দিন, এনামুল, ইয়াসির রহমান, জহিরুল ইসলাম ও জাবেদ। তাঁরা বরগুনা শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মঈনের (২০) স্বজন ও বন্ধু। তাঁদের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় মামলা করা হয়েছে।
মঈনের বন্ধুরা দাবি করেন, মঈনের শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, মঈনের বন্ধুরা নার্সদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। ঘটনার পর পরই খবর পেয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার বিজয় বসাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) কামরুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে দুইদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন মঈন নামের এক যুবক। তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকজন তরুণ হাসপাতালে ঘনঘন আসা-যাওয়া করতে থাকেন। এ সময় তাঁদের কেউ কেউ নার্সদের উত্ত্যক্ত করেন বলেও সংশ্লিষ্ট নার্সরা তাঁকে জানান। পরে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইকবাল, মিরাজ ও সালাহউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন যুবক একটি মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনের খালি প্যাকেট এনে নার্সদের দেখায়। এ সময় তাঁরা দাবি করে মঈনের শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়েছে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিযুক্তরা কর্মরত নার্সদের মারধর করে। এতে বরগুনা হাসপাতালের নার্স রিনা আক্তার, শামসুন্নাহার, সুইটি খানম, সীমা আক্তার এবং চতুর্থ শেণির কর্মচারী আবু সালেহ ও রাজু আহত হন।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মঈন এবং তাঁর বন্ধু ইকবাল জানান, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর মঈনকে যে স্যালাইন দেওয়া হয় তার মেয়াদ ছিল না। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে নার্সরা তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। পরে কথাকাটকাটির একপর্যায়ে নার্সরাও তাঁদের ওপর তেড়ে এলে এ সংঘর্ষ হয়।
বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় বরগুনা সদর হাসপাতালের আরএমও কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।