ছাত্রদল নেতাকে পাইপ দিয়ে পিটুনি, ভাঙচুর
বরগুনা জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুরাদুজ্জামান টিপনকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে বরগুনার কাঠপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত মুরাদুজ্জামান অভিযোগ করেছেন, জেলা যুবদলের সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ দলবল নিয়ে তাঁর (মুরাদুজ্জামান) ওপর হামলা করেছেন। এ সময় তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় মুরাদুজ্জামানকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা তাঁকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
আহত ছাত্রদল নেতা মুরাদুজ্জামান টিপন জানিয়েছেন, জেলা যুবদলের সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ তাঁর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানালেও তালিমুল তা পরিশোধ করেননি। এ বিষয়ে তিনি (মুরাদুজ্জামান) ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছে অভিযোগ জানালে তালিমুল ও তাঁর সহযোগী মিজান ও সোহাগসহ চার-পাঁচজনের একটি দল এ হামলা চালায় বলে তিনি জানান।
মুরাদুজ্জামান আরো জানান, জেলা যুবদলের সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। তালিমুলের মাত্রাতিরিক্ত মাদকাসক্তির কারণে জেলা যুবদলের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে এরই মধ্যে অনেকেই অব্যাহতি নিয়েছেন।
মুরাদুজ্জামান টিপনের বড় ভাই মুনিরুজ্জামান স্বপন জানান, শহরের কাঠপট্টি এলাকায় ল্যান্ড অ্যান্ড স্যান্স ও পন্ড অ্যান্ড স্যান্ড নামের তাঁদের দুটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আছে। তিনি ও তাঁর ছোট ভাই মুরাদুজ্জামান টিপন যৌথভাবে প্রতিষ্ঠান দুটি পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, পাওনা টাকা চাওয়ার জের ধরে মদ্যপ হয়ে অন্যায়ভাবে তাঁর ছোট ভাই মুরাদুজ্জামান টিপনকে যুবদল সভাপতি তারিমুল ইসলাম পলাশ লোহার পাইপ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেন। এ সময় তাঁদের অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুর চালান বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জেলা যুবদলের সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘টিপনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নিয়ে সোয়া লাখ টাকা শোধ করেছি। বাকি টাকার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করায় তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে টিপনের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি দাবি করেছেন, তুচ্ছ বিষয়কে ঘিরে ঘটে যাওয়া এ ঘটনাটিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অনেক বড় করে সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলাম জানান, যুবদলের সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশ এর আগেও এমন একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি দিন-রাত মাদকাসক্ত অবস্থায় থাকেন। শনিবার রাতে ছাত্রদল নেতা টিপনকে তিনি অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন। বিষয়টি বিএনপির জন্য লজ্জাজনক বলে জানিয়েছেন তিনি।
জেলা বিএনপির সভাপতি মাহবুবুল আলম ফারুক জানান, দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও তাঁরা যুবদল সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশকে শোধরাতে পারেননি। তিনি একের পর এক এমন ঘটনা ঘটিয়েই চলেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির সব নেতাকর্মী একটি জরুরি সভা করবেন বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ হোসেন জানান, তালিমুল ইসলাম পলাশ একাধিক মামলার আসামি। হামলার খবর পেয়েই বরগুনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান পলাশ ও তাঁর দল।
এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে ওসি রিয়াজ বলেন, ‘অভিযোগ পেলে মামলা হবে এবং আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’