পরকীয়ার জেরে ছেলেকে হত্যা : মা ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় পরকীয়ার জেরে ছেলে সোয়াইবুর রহমানকে (১১) হত্যার দায়ে মা সিতারা বেগম ও তাঁর প্রেমিক বারিক মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন। আসামি বারিক মিয়া এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি সিতারা বেগম পলাতক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুরের চিতুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম সৌদিপ্রবাসী। তাঁর স্ত্রী সিতারা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী বারিক মিয়ার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে রফিকুল ইসলাম দেশে এসে স্ত্রীকে এসব থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। পরে তিনি সৌদি আরব চলে গেলে সিতারা আবারও বারিক মিয়ার সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। বিষয়টি সিতারার ছেলে সোয়াইবুর একসময় বুঝতে পারে। সে এ ঘটনা বাবা রফিকুল ইসলামকে জানাবে বলে হুমকি দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিতারা ও বারিক শোয়াইবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুসারে ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিতারা ও বারিকের সহযোগী শিশু শাবুল মিয়া সোয়াইবুরকে গ্রামের চিতুলিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। সেখানেই শ্বাসরোধে হত্যা করে সোয়াইবুরের লাশ মাদ্রাসার শৌচাগারের ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় বারিক মিয়া।
পরে মা সিতারা ও বারিক সোয়াইবুর হত্যার ঘটনা চাপা দিতে সে নিখোঁজ হয়েছে বলে তাকে খোঁজার নাটক শুরু করে।
এদিকে স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ হওয়ার আগে সোয়াইবুরকে শাবুলের সঙ্গে দেখায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে শাবুল পুরো ঘটনার কথা স্বীকার করে। ঘটনার পরদিন সোয়াইবুরের চাচাতো ভাই হামজা মিয়া বাদী হয়ে বারিক, সিতারা ও শিশু শাবুলকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ ওই তিনজনকে আটক করে।
২০১৩ সালের ১৫ মার্চ ঘটনার তদন্ত শেষে বারিক, সিতারা ও শাবুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আদালত রায় দেন। মামলার অপর আসামি শাবুল শিশু হওয়ায় শিশু আদালতে তার বিচার চলছে।
সুনামগঞ্জের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ছইল হোসেন মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আসামিপক্ষে এ মামলার আইনজীবী ছিলেন রুহুল আমিন ও আবদুল ওদুদ।