‘ফণীর’ বিপদ কেটে গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ার নির্দেশ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘ফণীর’ বিপদ কেটে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা জনগণকে আজ শনিবার বিকেল ৪টার পর থেকে নিজ নিজ গৃহে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কমিটির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ডা. এনামুর রহমান আরো বলেন, ‘ফণীর’ বিপদ কেটে গিয়ে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
প্রতি মন্ত্রী বলেন, ‘ফণী’র প্রভাবে এখন পর্যন্ত সারাদেশে চারজন মারা গেছে। নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে তাদের পরিবারকে ঘরবাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফণী’ দুর্বল হয়ে আঘাত হানার কারণে ফসলি জমির তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ত্রাণ পৌঁছে দিতে বিমান বাহিনীর সব হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে। এর আগে সারা দেশের ১৬ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, তথ্য সচিব মো. আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ভারতের ওডিশা রাজ্যে ‘ফণী’র তাণ্ডব শুরু হয়। সেখানকার পুরি উপকূলে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে। সেখানে আটজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
এরপর সেটি পশ্চিমবঙ্গে আঘাত আনে। মধ্যরাতের পর ভারতের এই রাজ্যে প্রবেশ করে ‘ফণী’। ৯০ কিলোমিটার বেগে খড়গপুরে এটি আঘাত হানে। পরে আরামবাগ, কাটোয়া, নদীয়া হয়ে গেছে মুর্শিদাবাদে। তারপর সেখান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এটি এরই মধ্যে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এ কারণে আমরা সমুদ্রবন্দরগুলোকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলেছি। তার পরিবর্তে সব বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
‘ফণী’ যে ঢাকা ও এর আশপাশে অবস্থান করছিল সেটি আরো দুর্বল হয়ে দুপুর ১২টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে সারা দেশে বৃষ্টি ঝরছে। এই অবস্থা সারা দিনই অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।