‘ফণী’র প্রভাবে সুনামগঞ্জে ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সুনামগঞ্জে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে হাওর এলাকার কৃষকরা ধান কাটার কাজ বন্ধ রেখেছে।
আজ শনিবার সকাল থেকেই সুনামগঞ্জে প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি হয়। এ ছাড়া কয়েকদিন ধরে রোদ না উঠায় কৃষকরা মাড়াই করা ধান শুকাতে পারছে না। তারা ধান খলায় স্তূপ করে জমিয়ে রেখেছে।
অন্যদিকে রোদ না থাকায় হাওরের খলাতেই ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। তবে এখন পর্যন্ত ঝড়ে কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
সুনামগঞ্জের হাওড় এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান কেটে নিলেও তা খলাতেই রয়ে গেছে। রোদ না থাকায় তারা ধান শুকাতে পারছে না। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধানে পচন ধরবে বলে আশঙ্কা করছে তারা।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের হারুন অর রশীদ (৭০) জানান, তিনি এ বছর পাঁচ একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু চার দিন ধরে বৃষ্টিপাত থাকায় সেই ধান শুকাতে পারছেন না। আর এভাবে ধান খলাতে পড়ে থাকলে ধান পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আবদুল কাহার (৬৫) জানান, সব মিলিয়ে ১৭ একর জমিতে কয়েক প্রজাতির ধান লাগিয়েছেন। ফলনও আশানুরূপ হয়েছে। আগাম জাতের কিছু ধান কেটে আনা হয়েছে। কিন্তু রোদের অভাবে সেই ধান খলাতেই রাখা হয়েছে। আর ২৯ জাতের ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে কিন্তু ধান কেটে আনা যাচ্ছে না। কৃষকরা বজ্রপাতের ভয়ে হাওরে নামতে চাইছে না, এভাবে বৃষ্টিপাত থাকলে সব ধান পানির নিচে চলে যাবে। তাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মেঘালয়ের পানি সুনামগঞ্জে নেমে আসছে। প্রচুর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুরমা নদীর পানি বাড়ছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শফিউল ইসলাম জানান ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব মোকাবিলায় প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বশির আহমেদ সরকার জানান, আজ পর্যন্ত হাওর এলাকায় দুই লাখ ২৪ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে এক লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে বৃষ্টি থাকায় হাওরের কৃষকরা ধান শুকাতে পারছেন না।