খাগড়াছড়িতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা
অব্যাহত বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ির বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারি বর্ষণে জেলার চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনী নদীর পানি বেড়েই চলেছে।
আজ বুধবার সকাল থেকে ভারি বর্ষণের ফলে এরই মধ্যে জেলার দীঘিনালা উপজেলার ছোট মেরুং বাজারসংলগ্ন এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পানি বেড়েছে মহালছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে।
জেলা শহরের গঞ্জপাড়া, মুসলিমপাড়া, বটতলী, কালাডেবা, বাঙ্গালকাটি, রাজ্যমনিপাড়া, ফুটবিল, মেহেদীবাগসহ বিভিন্ন গ্রাম আগের মতোই পানিতে নিমজ্জিত। এ সব গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার বর্তমানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই শতাধিক পরিবার উঠেছে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের রাতের খাবার দেওয়া হয়।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. জাফর আহম্মদ জানান, বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে খিচুরি বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মহালছড়ি সড়কের ২৪ মাইল ও চোংড়াছড়ি এলাকার সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি ও রাঙামাটির আঞ্চলিক সড়কে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। মেরুংয়ের সঙ্গে দীঘিনালার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে।
এরই মাঝে গতকাল সন্ধ্যায় পাহাড় ধসে দীঘিনালার বাবুছড়া এলাকার উল্টাছড়ি গ্রামে যুগেন্দ্র চাকমা (৪০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সার্বিক পরিস্থিতিতে জেলা শহরের শালবন এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা ৩০টি পরিবারকে গতকাল বিকেলেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় শালবন টেক্সটাইল ভোকেশনাল আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামসুন নাহারের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ওই সব পরিবারকে প্রাণহানির শঙ্কার কথা বুঝিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে আশ্বস্ত করেন।
উদ্ভূত বন্যা পরিস্থিতি ও প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা শহরে আটটিসহ ৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুইক রেসপন্ড টিম গঠন করে সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্টসহ স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করছে বলেও জানান তিনি।