বরগুনায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, ২ জনের যাবজ্জীবন
বরগুনায় অনিক চন্দ্র রায় নামের এক কলেজছাত্রকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ ও হত্যার পর লাশ গুমের ঘটনায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায় দেন।
অনিককে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত বরগুনা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার ছাত্তার গাজীর ছেলে সালাউদ্দীনকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড ও সদর উপজেলার গৌরীচন্না এলাকার নাজমুল (২৬) এবং থানাপাড়া এলাকার রুবেলকে (২৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সালাউদ্দীনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপহরণ ও খুনের ১৭ দিন পর অনিকের গলিত মৃতদেহ বরগুনার সদর থানাসংলগ্ন পরিত্যক্ত সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় থানাপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে চা পানের জন্য বাইরে গিয়ে নিখোঁজ হন অনিক। এর পর অপহরণকারী সালাউদ্দীন নিহত অনিকের বাবা সুবল চন্দ্র রায়ের কাছে মুঠোফোনে দুই দফায় প্রথমে দুই লাখ ও পরে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের এই টাকা নিয়ে বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলায় যেতে বলে অপহরণকারীরা। সে অনুযায়ী মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আমতলী যাওয়ার পর অপহরণকারীদের মোবাইলটি বন্ধ পাওয়ার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি অনিকের বাবা।
এ ঘটনায় পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন অনিকের বাবা। পরে এই সাধারণ ডায়েরিটি অপহরণের পর হত্যা ও মৃতদেহ গুমের মামলায় পরিণত হয়। এ মামলায় পুলিশ সালাউদ্দীন, নাজমুল ও রুবেলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ বিষয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হলেও অনিকের পরিবারের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁদের প্রত্যাশা ছিল, এ মামলার সব আসামির মৃত্যুদণ্ড হবে।’
এ বিষয়ে মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী কমল কান্তি দাশ ও আবদুর রহমান নান্টু বলেন, ‘মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ জন্য আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’