দুঃশাসনের অবসান হওয়া জরুরি : খালেদা জিয়া
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই দুঃশাসনের অবসান হওয়া জরুরি। জনগণ যদি অবাধে ভোট দেওয়ার অধিকারটুকু ফিরে পায়, তাহলেই তারা স্বৈরাচারী শাসনের বিপক্ষে তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারবে।’
৭ নভেম্বর ‘মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে আজ শুক্রবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এক বাণীতে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। দিবসটি উপলক্ষে তিনি দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।
দেশ যখন অপশাসনে নিপতিত হয় তখন গণতন্ত্র, স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল্যবোধ, অঙ্গীকার হুমকির সম্মুখীন হয় উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন একটি বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত। তারা দমন-নিপীড়নের মধ্য দিয়ে জনগণের কণ্ঠরোধ করে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে শুধুই ক্ষমতায় থাকতে এখন বিভোর হয়ে উঠেছে।’
৭ নভেম্বর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, ‘১৯৭৫ সালের এ দিনে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সৈনিক-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে। ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রেরণার উৎস।’
‘স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের রাজনীতি ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠার একপর্যায়ে একদলীয় বাকশালী একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা রূপ পেয়েছিল। এমনই এক প্রেক্ষাপটে মতাদর্শগত কোন্দল যখন চরমে উঠেছিল, তখন আওয়ামী লীগেরই একটি বৃহৎ অংশ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি অভ্যুত্থান সংগঠিত করে ক্ষমতা দখল করে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৩ নভেম্বর সেনাবাহিনীর একটি অংশ আধিপত্যবাদের ভাবনায় প্ররোচিত হয়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে।’
‘দেশবাসী ও সশস্ত্র বাহিনীর দেশপ্রেমিক সদস্যরা উপলব্ধি করতে পারেন, জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্যই এই চক্রান্ত করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তকে রুখে দেওয়ার জন্য অকুতোভয় সৈনিক-জনতা এক ইস্পাত কঠিন ঐক্যে শপথবদ্ধ হন ৭ নভেম্বর এক ঐতিহাসিক বিপ্লব সংগঠনের জন্য। তারা বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন তাঁদের প্রিয় সেনাপতিকে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন আরো উল্লেখ করেন, ‘এই ঐতিহাসিক পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশ নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।’