প্রেম করায় গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা!
প্রেম করায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় এক কলেজছাত্রকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাঁকে রড দিয়ে পেটানোর পাশাপাশি গরম ইস্ত্রি দিয়েও পিঠে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এলাকাবাসীর সহায়তার ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে মিছিল করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গেন্দুকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে মেয়েটির পরিবারের দাবি, কলেজছাত্র তাকে তুলে নিতে এসেছিল।
আজ বুধবার সকালে হাতিবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, কলেজছাত্র রফিকুল ইসলাম হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। তাঁর দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের দাগ রয়েছে। আর পুরো পিঠজুড়ে দগদগে ক্ষত। রফিকুল উপজেলার গোতামারী গ্রামের উকিল মাহমুদের ছেলে।
আহত রফিকুল জানান, গেন্দুকুড়ি গ্রামের মাদ্রাসা পড়ুয়া একটি মেয়ের সঙ্গে তাঁর বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়েটির ভাই চয়ন ক্ষিপ্ত হয়। এ নিয়ে তাঁকে বেশ কয়েকবার হুমকিও দেওয়া হয়।
গতকাল রাতে মাদ্রাসাপড়ুয়া ছাত্রীর এক ভাবী (চয়নের স্ত্রী) কলেজছাত্রকে ফোন দিয়ে জানায়, মেয়েটি ভীষণ অসুস্থ, সে যেন দেখতে যায়। রফিকুল বাড়িতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটির ভাই চয়ন ও মামা লিমন কলেজছাত্রকে সাইকেলের রড দিয়ে পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে তাকে গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জলিল ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত রফিকুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি বলেন, ‘প্রেম করার অপরাধে রফিকুলকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনের আশ্রয় নেব।’
এদিকে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে যেতে একই হাসপাতলে গতকাল ওই ছাত্রীকেও ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কলেজছাত্রের পরিবার। তবে মেয়েটির পরিবার দাবি করেছে, রাতে মেয়েটিকে তুলে নিতে এসেছিল রফিকুল।
তবে প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে মেয়েটি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মিথ্যা কথা বলে রফিকুলকে ডেকে এনে প্রচণ্ড নির্যাতন করা হয়েছে।’
কলেজছাত্রের বাবা উকিল মাহমুদ বলেন, ‘আমার ছেলেকে যেভাবে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে তাতে সে অল্পের জন্য বেঁচে গেছে।’
হাতীবান্ধা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে কলেজছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।’