তেলের লরি নিয়ে পুলিশের দিনভর ‘নাটক’
‘চোরাই সন্দেহে’ প্রায় নয় হাজার লিটার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলসহ আটক একটি লরি নিয়ে দিনভর নানা গুঞ্জন চলেছে লালমনিরহাটে।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে লরিটি আটক করা হয়। এ সময় লরিতে থাকা তিনজনকেও আটক করা হয়। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আটক তিনজনের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি। লরিটি এখন আদিতমারী থানায় রয়েছে।
জানা গেছে, আটকের পর জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তার নির্দেশে লরিটি প্রথমে ছেড়ে দেওয়া হলেও পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তা আবার আটক করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদিতমারী থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ‘বেকায়দায়’ আছেন।
স্থানীয়রা ধারণা করছে, লরিতে করে মুন্সীগঞ্জ থেকে চোরাই তেল বিক্রির জন্য লালমনিরহাটে আনা হয়েছিল।
আদিতমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সারওয়ার আলম সন্ধ্যায় দাবি করেন, ‘লরির মালিক কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসছেন। তিনি এলেই সত্যি ঘটনা বোঝা যাবে।’
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, ‘এ নিয়ে পরে কথা হবে।’
লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার টি এম মুজাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তেল বা লরির প্রকৃত মালিক এলেই কাগজপত্র যাছাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আদিতমারী উপজেলার স্বর্ণামতি ব্রিজ এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সন্দেহবশত লরিটি আটক করে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে এসআই সারওয়ার আলম গিয়ে সেটি থানায় নিয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ লরিতে থাকা তিন ব্যক্তিকেও আটক করে।
পুলিশ লরিতে থাকা লোকজনের কাছে চালানসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখতে চাইলে তাঁরা তা দেখাতে পারেননি। তারা সুর্নিদিষ্ট কোনো পেট্রলপাম্পের কথাও বলেননি। তবে তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছে, লরিতে থাকা কিছু তেল সিরাজগঞ্জে বিক্রি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, লরিটি আটকের পর পরই জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা সেটি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তখন সেটি ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তখনি পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানার গেটেই লরিটি পুনরায় আটকিয়ে দেয় পুলিশ।
এরপর শুরু হয় নানা দেন-দরবার। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি পুলিশ। লরির মালিক কে বা সেটি নির্দিষ্টভাবে কোন জায়গা থেকে এসেছে তাও জানায়নি আদিতমারী থানার পুলিশ।