জেলেদের ট্রলারে জলদস্যুদের গুলি, এক জেলে নিহত
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় জেলেদের ট্রলারে গুলি চালিয়েছে জলদস্যুরা। এতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেল নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো তিন জেলে।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সুন্দরবনসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের কচিখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জেলের নাম ইসমাইল (৩০)। তিনি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রুপধোন এলাকার মৃত আফজাল আলীর ছেলে।
জলদস্যুদের হামলায় আহত জেলেরা হলেন রিয়াজ, ইসমাইল, নজরুল ও নাসির। তাঁদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার সময় জলদস্যুরা এক জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আহত ও অপহৃত জেলেদের বাড়ি পাথরঘাটার বিভিন্ন গ্রামে।
ফিরে আসা জেলেরা জানান, সিডর-পরবর্তী জেলেদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের অনুদানের একটি ট্রলার নিয়ে শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরের কচিখালী এলাকায় জাল ফেলে অপেক্ষা করছিলেন জেলেরা। এ সময় ১৫-২০ জনের একটি সশস্ত্র জলদস্যু বাহিনী তাদের ধাওয়া করে। এ সময় তারা জাল ফেলে ট্রলার নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে, প্রথমে জলদস্যুরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে জলদস্যুদের ট্রলারটি তাদের ট্রলারের কাছে এলে জেলেরা চিৎকার শুরু করেন। এ সময় তাঁদের দিকে গুলি ছুড়লে ইসমাইল বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ট্রলারে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই ইসমাইলের মৃত্যু হয়। পরে ওই ট্রলারে উঠে জলদস্যু বাহিনী ট্রলারে থাকা পাঁচ জেলেকে পিটিয়ে আহত করে ট্রলারের মাঝি রিয়াজকে অপহরণ করে সুন্দরবনের গহিনে নিয়ে যায়। পরে আহতরা ট্রলারটি চালিয়ে আজ শনিবার দুপুর ১টার দিকে পাথরঘাটা নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। কর্মসূচির প্রথম দিনে সব জেলে ও ট্রলারমালিকরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। দ্বিতীয় দিন তারা প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেবেন এবং তৃতীয় দিনে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। আর এই তিনদিনে কোনো ট্রলার মাছ ধরবে না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট এস এ আবদুর রউফ জানান, ঘটনার পর সাগরে কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে। নিহত জেলের মৃতদেহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আর অপহৃত জেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।