বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্যের জের ধরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় সেখানে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
গত রোববার ঘটনার পর বিকেলেই শিক্ষক সমিতি জরুরি বৈঠক ডেকে দোষীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে এক সপ্তাহের কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। এদিকে ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রতিবেদন আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে জমা দেওয়া জন্য বলা হয়েছে।
ওই ঘটনার পর থেকে বুয়েটের কোনো অনুষদে কোনো প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। শিক্ষার্থীরা এলেও শিক্ষকরা একাডেমিক কোনো কাজে আসছেন না। আজ বুধবার বুয়েটে ক্যাম্পাসে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আনাগোনা ভালোই আছে। তাঁরা ক্লাসের প্রস্তুতি নিয়েই ক্যাম্পাসে এসেছেন। কিন্তু শিক্ষকদের দেখা যায়নি।
বুয়েটের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক খালেদা ইকরাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ওই ঘটনার পর থেকে ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হাসিব চৌধুরী বলেন, শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। যদি এর মধ্যে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাহলে আবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান।
তবে বুয়েট শিক্ষার্থী ইমন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা চাই নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হোক। আমরা রাজনৈতিক কারণে একাডেমিক কাজে পিছিয়ে পড়তে চাই না।’
সূত্র জানায়, গত রোববার দুপুর ১টায় বিভাগীয় অফিসে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বসে ছিলেন। এ সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ্র জ্যোতি টিকাদার ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনকের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতাকর্মী ওই শিক্ষককে কক্ষ থেকে বের করে মারধর করতে থাকেন। এতে জাহাঙ্গীর আলমের নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে টানতে টানতে ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাফেটেরিয়া থেকে অধ্যাপক জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় বুয়েটের অন্যান্য শিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরের পক্ষ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে জড়ো হন। তবে এ ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছিল ছাত্রলীগ।
ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়া বিষয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বুয়েটের শিক্ষকরা অনেক ছোট ঘটনাকে বড় করে দেখেন। ভিসি নির্বাচনের সময় শিক্ষকরা প্রায় ছয় মাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে রেখেছিলেন। এখন শিক্ষকরা কোন উদ্দেশ্যে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করেছেন আমরা বুঝতে পারছি না।’