ভূমিকম্পের সময় শ্রমিকদের বের হতে বাধা
ভূমিকম্পের সময় পাবনার ঈশ্বরদীর রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) কারখানা থেকে বের হতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা।
প্রথমবার ভূমিকম্পের পর কারখানা থেকে বের হওয়া শ্রমিকদের জোরপূর্বক ফ্যাক্টরিতে ঢুকতে বাধ্য করে কর্তৃপক্ষ। পরে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে এলোপাতাড়ি নামতে গিয়ে দুর্ঘটনা শিকার হন শতাধিক নারী শ্রমিক। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গেলে ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষের ‘ভাড়াটিয়া মাস্তান বাহিনী’ প্রশাসনের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করে ও তাঁদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
আহত শ্রমিকদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। আজ শনিবার দুপুরে ভূমিকম্পের সময় ঈশ্বরদী ইপিজেডের তিনটি ফ্যাক্টরিতে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত নারী শ্রমিক সালমা, শরিফা ও নাজমা এনটিভি অনলাইনকে জানান, দুপুর ১২টা ১১ মিনিটের সময় প্রথম দফা ভূমিকম্প হয়। এ সময় ইপিজেডের নাকানো ইন্টারন্যাশনাল, রুলিং বিডি ও এমজিএল কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানা থেকে বের হয়ে যান। এ সময় মালিকপক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রমিকদের জোরপূর্বক ফ্যাক্টরিতে ঢুকিয়ে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়।
আবার ১২টা ৪৮ মিনিটে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্প হলে আতঙ্কিত নারী শ্রমিকরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে তিনটি কারখানার শতাধিক নারী শ্রমিক আঘাত পান। এঁদের মধ্যে অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান।
সহকর্মীরা তাঁদের পানি ঢেলে সুস্থ করে তোলেন। আবার অনেককে চ্যাংদোলা করে ইপিজেড চিকিৎসাকেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয় বলে জানান আহত শ্রমিকরা।
এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সংবাদকর্মীরা সেখানে ছুটে যান। এ সময় পুলিশ ও ইপিজেড কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ইপিজেডের একজন কর্মকর্তা ও ইপিজেডের কারখানা কর্তৃপক্ষের ভাড়াটিয়া মাস্তান বাহিনী সংবাদকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তুলতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় সাংবাদিক আনিসুর রহমান পলাশ। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পুলিশের সামনেই আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় এবং মাস্তানরা সংবাদকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় প্রশাসনের সদস্যরা নীরব ভূমিকা পালন করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাইন আহমেদ ছিনিয়ে নেওয়া ক্যামেরা উদ্ধার করে দেন বলে জানান পলাশ।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাশ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, একজন সাংবাদিকের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাঁর ক্যামেরা ফেরত দেওয়া হয়েছে।