দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ, টাঙ্গাইলে দুজন আটক
টাঙ্গাইলে মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকাসহ অপহরণচক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এক প্রবাসীকে অপহরণ করে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আটক ব্যক্তিরা।
গতকাল সোমবার রাতে দাবি করা টাকার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার সময় টাঙ্গাইল র্যাব-১২-এর সদস্যরা হাতেনাতে দুজনকে আটক করে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল র্যাব কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আজিবপুর এলাকার সুরুজ মিয়া লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর শ্যালক মাহবুবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করেন। গত ২৯ আগস্ট সকালে অজ্ঞাতপরিচয় একটি মোবাইল ফোন থেকে জানানো হয় মাহবুবকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ করা হয়েছে। তাঁকে জীবিত অবস্থায় পেতে চাইলে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। একপর্যায়ে ৩০ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মাহবুবের পরিবার। অপহরণকারীরা মুক্তিপণের টাকা নিয়ে টাঙ্গাইলের একটি অজ্ঞাতস্থানে যেতে বলে।
মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, র্যাবের একটি দল ফোনের সূত্র ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলে। টেলিফোনের মাধ্যমে সুরুজ মিয়াকে অপহরণকারীরা ঢাকা-মির্জাপুর বাইপাস সড়ক ধরে বামনহাটি আদালতপাড়া যেতে বলে। সেখানে আগে থেকেই অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য উপস্থিত ছিল। আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া একটি কোড নম্বর বলে সুরুজ মিয়া অপহরণকারীদের চিহ্নিত করেন। এরপর ৩০ লাখ টাকা লেনদেনের সময় র্যাবের সদস্যরা তাদের আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হয় র্যাব।
র্যাব জানায়, মির্জাপুরের হালপাড়া গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে মনির হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা মাহবুবকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণ করেছিল। মনিরের বাবা ও তাঁর সহযোগী জিয়াউর রহমানকে আটক করার খবর পেয়ে গতকাল রাতেই অপহৃত মাহবুবকে দেশটির কেপটাউনের একটি রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।
আটক দুজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকায় তাদের সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশিদের অপহরণ করে দেশে এভাবে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থাকে। এ পর্যন্ত চক্রটি অন্তত ১০টি অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। যার মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
এ ঘটনায় টাঙ্গাইল মির্জাপুর থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী।