প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার ধরনা
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মাগুড়াইল গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক মনিরুল হোসেন মনিরের (২২) বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন প্রেমিকা রিনা আক্তার (১৮)। দুই দিন ধরে তিনি ওই বাড়িতেই অবস্থান করছেন। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তিনি ওই বাড়িতেই থাকবেন, অন্যথায় আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন।
মনির ওই গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে এবং মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর একই গ্রামের দুলাল খলিফার মেয়ে রিনা পাশের বাড়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।
রিনা জানান, এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি মেজো। তাঁর বাবা গবাদি পশুর (ছাগল) ব্যবসায়ী। পরিবারের আর্থিক দৈন্যতার কারণে তিনি বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারেননি। এ অবস্থায় তিন বছর ধরে মনিরের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভনে মনির তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তোলে। গত শনিবার সকাল ১১টার দিকে মনির বিয়ের জন্য তাঁকে নিজ বাড়িতে ডেকে আনে। স্বজনরা বিয়ের ব্যবস্থা না করে মনিরকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছে। মা-বাবা ও ঘর ছেড়ে তিনি মনিরের বাড়ি চলে এসেছেন। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান রিনা।
এ ব্যাপারে মনিরের বোনের জামাই জনি মিয়া নিজেকে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতার আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে বলেন, ‘বিয়ের জন্য এলেই কি বিয়ে হয়। এটা কোনো ঘটনাই না। মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ঝামেলা শেষ করা হবে।’
মনিরের খালু গাজীউর রহমান দাবি করেন, মনিরের সঙ্গে রিনার কোনো প্রেমের সম্পর্ক নেই। মনিররা বিত্তশালী হওয়ায় এলাকার কিছু লোক চক্রান্ত করে ওই মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠিয়েছে। যেহেতু মেয়েটি এখনো মনিরদের বাড়িতে আছে। তাই এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিয়ে বসে সুরাহা করা হবে।
স্থানীয় উথলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুভাষ চন্দ্র দাস জানান, গতকাল রোববার রাতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মনিরদের বাড়ি গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা হয়। এরপর মনিরের পরিবারের লোকজনকে বিয়ের জন্য বলা হলে তারা মোটরসাইকেল ও মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দাবি করায় তা সম্ভব হয়নি। সুষ্ঠু সুহারা করতে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনা তিনি জানেন না। তা ছাড়া বিষয়টি কেউ পুলিশকে জানায়নি। তবে, মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।