মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সরকারের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন, তা পূরণ করবে আওয়ামী লীগ সরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আজ শনিবার (১ জুলাই) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সভার শুরুতে দলীয় প্রধানের নির্দেশে কোটালীপাড়ার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। এসময় তারা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর গত এক বছরে তারা যে সুবিধা পেয়েছেন তা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে স্বপ্নের এই সেতু নির্মাণে সাহসী ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা চায়নি আওয়ামী লীগ কোনোদিন ক্ষমতায় আসুক, এদেশের মানুষ আবার পেট ভরে ভাত খাক, মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হোক, রোগে চিকিৎসা পাক, শিক্ষা পাক, তাদের প্রতি আমাদের চ্যালেঞ্জ। এই দেশ আমার বাবা স্বাধীন করেছেন। আমার বাবা যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, সেটা আমি করব। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা এটাইতো আমাদের লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু। মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিল। নিজের ভাগ্যতো গড়তে আসিনি। নিশ্চয় বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তারপরও যে অপবাদ দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারা যুগিয়েছেন। কোটালীপাড়াবাসী আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আজকে আপনারাই আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার নির্বাচন, আমার সব কিছুই আপনারা দেখেন। আমার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষগুলোই তো আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। যারা দেশের কোনো ভালো কিছু চোখে দেখে না, চোখ থাকতে যারা অন্ধ, তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নাই। তারা দেখে না, কিন্তু ভোগ করে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন। সবাই সারা দিন কথা বলে। এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল দিয়ে দিয়েছি। সারা দিন কথাবার্তা বলে, তারপর যদি বলে কিছুই বলতে পারি না, কথা বলার অধিকার নাই। এদের ব্যাপারে করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নাই। আমরা তাদের করুণাই করি।’
শেখ হাসনা বলেন, ‘আমাদের ফসল আমাদেরই ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্য চাহিদা আমরা পূরণ করব। আর যা উদ্বৃত্ত থাকে তা অন্যদের দিতে পারব। সেটাই আমরা করব। খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করছি। আমরা প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেবো। যা যা সহযোগিতা করার আমরা করব।’
সরকার প্রধান আরও বলেন, ‘আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে গেছেন। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমার লক্ষ্য। আজকে হতদরিদ্র মাত্র পাঁচ ভাগ, সেটাও যেন না থাকে, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। হতদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না। প্রত্যেকেরই একটি ঘর, জমি আর জীবন জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমরা করতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি। শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। স্কুলগুলোকে আমরা নতুনভাবে তৈরি করে দিচ্ছি। পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছি। বৃত্তি দিচ্ছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আমরা বৃত্তি দেবো। বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায় ধর্মীয়ভাবে যার যার সৃষ্টিকর্তার কাছে কামনা করবেন। এই বাংলাদেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে আমরা চলবো। বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলবে। সেটাই আমরা চাই।’
নিজ নির্বাচনি এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও মতবিনিময় করতে শনিবার দুই দিনের সফরে গোপালগঞ্জে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আগামীকাল রোববার (২ জুলাই) টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘরের মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ।