বরেণ্য সাংবাদিক সাহিত্যিক সন্তোষ গুপ্তের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী
আজ বরেণ্য সাংবাদিক-সাহিত্যিক, দৈনিক সংবাদের সাবেক সিনিয়র সহকারী সম্পাদক সন্তোষ গুপ্তের ১৯-তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৪ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আশি বছর বয়েসে এই পৃথিবী ছেড়ে সন্তোষ গুপ্তের চ’লে যাওয়া, তাঁর জন্য কোন ঘটনা না হলেও, তাঁর চারপাশের মানুষের জন্যে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করে। একটি যুগের অবসান ঘটে। দৃশ্যত্ব একটি আলোকরশ্মি মহাকালে হারিয়ে যায়।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র জগতে সন্তোষ গুপ্ত একটি উজ্জল নক্ষত্রের নাম। একাধারে নিষ্ঠাবান সাংবাদিক, চিন্তাশীল লেখক এবং অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন তিনি। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় তাঁর পদযাত্রা ছিল অপরিমেয় মেধা ও দক্ষতাপূর্ণ। রাজনৈতিক চেতনায় অভিষিক্ত হয়ে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিলেন। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তাঁর রাজনৈতিক ভাষ্য অনেক রাজনৈতিক নেতার জন্য ছিল এক ধরনের দিক্ নিদের্শনা।
সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ সন্তোষ গুপ্ত’র জন্ম ১৯২৫ খৃস্টাব্দের ৯ জানুয়ারি ঝালকাঠির রুনসী গ্রামে। তিনি বাবা-মার একমাত্র সন্তান ছিলেন। ১৯৫৭ সালে তিনি সাংবাদিকতায় আসেন। দীর্ঘ প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে তিনি আমাদের সাংবাদিকতা জগতে এক উজ্জল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে ছিলেন। তাঁর অসাধারণ তীক্ষ্ন ‘অনিরুদ্ধের কলাম’ আমাদের বিদগ্ধ মহলে সমাদৃত ছিল। সাংবাদিকতা পেশায় আসার আগে তিনি বামধারার রাজনীতির সঙ্গেঁ জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর কারাবরণ করতে হয়েছে। দেশ ভাগের সময় অপসন দিয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন।
শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে সন্তোষ গুপ্তের অবাধ বিচরণ ছিল। কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতি, সাহিত্য, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ১৮টি গ্রন্থ রয়েছে। সম্পাদনা করেছেন বহু গ্রন্থ। তাঁর অসংখ্য লেখা এখনও অগ্রন্থিত রয়েছে। সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) পেয়েছেন, এছাড়াও তিনি একুশে পদক, শেরে বাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদক, মাওলানা তর্কবাগীশ পদক, জহুর হোসেনের স্মৃতি পদকসহ বহু পুরস্কার, পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
সন্তোষ গুপ্তের চতুর্দশ মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আজ সকাল ৯টায় পোস্তগোলায় নির্মিত সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতিস্মম্ভ -এ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। সন্তোষ গুপ্তের পরিবারের পক্ষ থেকেও তাঁর স্মৃতিস্মম্ভে শ্রদ্ধা জানানো হয়।