বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
টানা চার দিনের বৃষ্টিতে বান্দরবানে বন্যার পানি বেড়ে শহরের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের বাইতুল ইজ্জত এলাকায় সড়কের উপর পানি উঠায় বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এদিকে শহরের জ্ঞানরত্ন বৌদ্ধ বিহার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় রাঙ্গামাটির সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এ ছাড়াও রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানছি সড়কে রোববার থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জিপ-কার-মাইক্রেবাস শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন জানান।
প্রচণ্ড বৃষ্টিতে শহরের বালাঘাটা, ফজর আলী পাড়া, চেয়ারম্যান পাড়া, পুলিশ লাইন এলাকা, ছাইগ্যা মহাজন পাড়া, হট্টিকালচার এলাকা, লালমিয়া চর এলাকা, বাস স্টেশন, হাফেজঘোনা, আর্মিপাড়া, কাশেম পাড়া, স্টেডিয়াম ও কেচিং পাড়া এলাকার জনগণ দুই দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টির কারণে বান্দরবান শহর ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের সরে যেতে প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বান্দরবানের ৭টি উপজেলায় দুর্গতদের সহায়তায় ১৯৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। ২০ টন খাদ্যশস্য এবং নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৪৩টি মেডিকেল টিম স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমেন শর্মা জানান, এ পর্যন্ত পাহাড় ধসে ৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে বান্দরবান শহরের বীর বাহাদুর নগর ও স্টেডিয়াম এলাকায় পাহাড় ধসে আহত দুইজনকে রোববার রাতে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউএনও আরও জানান, এদিকে নাইক্ষংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নে খাল পার হতে গিয়ে রবিবার বিকালে মেমপই ম্রো (৩০) নামে এক ব্যক্তি স্রোতে ভেসে গেছে। নিখোঁজ এ ব্যক্তির এখনো সন্ধান মিলেনি।
বন্যার সংবাদ সংগ্রহের জন্য একটি ওয়েব পেইজ খুলেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে বলা হয়েছে, বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় ধসে ৭১৮টি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রবল বর্ষণের ফলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বন্দি মানুষকে উদ্ধারে বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসন এবং স্থানীয় উদ্যোগে পর্যাপ্ত পরিমাণ নৌযান নামানো হয়েছে।