নেত্রকোনায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু
ভারি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় নেত্রকোনার পাঁচ উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। দুর্গাপুরে পানিতে ডুবে মারা গেছে একজন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, কলমাকান্দায় উপদাখালী, নেতাই, পূর্বধলা ও বারহাট্টায় কংস, সদরের মগড়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে বৃষ্টি হওয়ায় সোমেশ্বরী, কংস, উপদাখালী, মগড়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পূর্বধলায় কংশ নদের পানি বেড়ে উপজেলার নাটেরকোনায় বেড়িবাধঁ ভেঙে উপজেলার সাত-আটটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বৃষ্টি না হওয়ায় নদ- নদীর পানি কিছুটা কমলেও আজ সকালে ফের বৃষ্টি হওয়ায় নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
জেলার পাঁচ উপজেলায় প্রায় ২০০ গ্রামে পানি প্রবেশ করায় কদিন ধরে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় বয়েছে। ডুবে গেছে ফিসারি, পুকুর, গ্রামীণ সড়ক। পানি না কমায় মানুষের বাড়ছে দুর্ভোগ। মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। জেলায় ১৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, পূর্বধলা, সদর, বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গবাদি পশু নিয়ে মানুষ বিপদের মধ্যে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকট। বন্যার্তদের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্ত মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, তেল শিশু খাদ্য ও গো খাদ্যের জন্য নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
দুর্গাপুরে ঢলের পানিতে ডুবে রুসমত খান (৬০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। গতকাল বিকেলে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ সকালে চারপাশে পানি থাকায় সড়কের পাশে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, উপদাখালী, কংসসহ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি হওয়ায় পানি কিছুটা বেড়েছে।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যাকবলিত মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ওই সব আশ্রয়কেন্দ্রে বেশ কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।