রাঙ্গামাটির চার উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
রাঙ্গামাটিতে বৃষ্টিপাত কমে পানি নামতে শুরু করায় চারটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আস্তে আস্তে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে, ১০ উপজেলায় তিন হাজার ১৩৫ হেক্টর ফসলি জমিসহ নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। চার উপজেলা হলো–বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, রাজস্থলী ও বরকল।
বাঘাইছড়ি পৌরসভা মেয়র মো. জমির হোসেন জানান, টানা সাতদিনের বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বন্যার পানিতে আটকা পড়েন এবং প্রায় এক হাজার পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। তবে, বর্তমানে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে পানি নামতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দুর্গতদের মাঝে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, সড়কের পানি কমে যাওয়ায় সাজেক পর্যটন ভ্যালিতে আটকে পড়া পর্যটক ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারী ইন্দ্র চাকমা জানান, কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের কবাখালী স্থানে পানি ওঠায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে সাজেকে পর্যটকরা তিন দিন ধরে আটকে ছিলেন। পানি কমায় অনেক পর্যটক চলে গেছেন।
অন্যদিকে, জুরাছড়ি উপজেলা চারটি ইউনিয়ন, বিলাইছড়ি উপজেলায় ফারুয়া ইউনিয়নে ও বরকল উপজেলায় ভারী বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া এলাকা থেকে আস্তে-আস্তে পানি কমতে শুরু করেছে। সেখানেও দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, ‘উপজেলায় যেসব স্থানে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সেসব স্থান থেকে ধীরে ধীরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে।’ তিনি জানান, উপজেলার কয়েকটি এলাকায় এখনো ৫০০ থেকে ৬০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে প্রায় এক হাজারের অধিক পরিবার। এসব পরিবারদের খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জুরাছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, ‘উপজেলায় যেসব স্থানে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এইসব এলাকা থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির এলাকা পরির্দশন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তালিকা তৈরীর করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আছে তাদেরকে উপজেলা প্রশাসন থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।