বাহরাইন গিয়ে আট বছর ধরে নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেতে চান বাবা-মা
পরিবারের অভাব অনটন দূর করতে আট বছর আগে ভিটেমাটি বিক্রি করে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনে পাড়ি জমান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার চরকাওনা উত্তর পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হক (২৬)। সেখানে পৌঁছানোর ২২ দিন পর থেকে আজিজুলের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন পরিবারের সদস্যরা। ছেলের সঙ্গে কী ঘটেছে, জানেন না বাবা-মা।
আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা শহরের একটি সংবাদ মাধ্যমের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাহরাইনে নিখোঁজ ছেলের খোঁজ পেতে তার দরিদ্র বাবা-মা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিখোঁজ আজিজুলের বাবা দুলাল মিয়া জানান, ভিটেমাটি বিক্রি করে সাড়ে চার লাখ টাকা জমা দিয়ে আজিজুল ২০১৬ সালে বাহরাইনে পাড়ি জমান। পাকুন্দিয়া উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের আদম ব্যবসায়ী সোহরাব উদ্দিন ও কামাল উদ্দিনের কথা মতো ঢাকা বনানীর একটি অফিসের মাধ্যমে বাহরাইনে যান। সেখানে গিয়ে ২২ দিন আজিজুল পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে পারলেও গত প্রায় আট বছর ধরে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি। নিজ সন্তানের খোঁজ না পাওয়ায় বিভিন্ন সময় সন্তানের বিষয়ে জানতে গিয়ে আদম ব্যবসায়ীদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন দুলাল মিয়া।
আজিজুলের মা পারভীন আক্তার জানান, পরিবারের ছয় সন্তানের মধ্যে আজিজুল হক দ্বিতীয়। সন্তান নিখোঁজ, সেই সঙ্গে চরম দারিদ্রতায় নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। সন্তানকে ফিরে পেতে সংশ্লিষ্টদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন পারভীন আক্তার।
আজিজুলের প্রতিবেশী রিপন মিয়া বলেন, ‘আজিজুল নিখোঁজের পর খুঁজে পাওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আদম ব্যবসায়ীদের ঢাকার বনানী অফিসে গিয়ে জানতে চাওয়া হয়। চুরির দায়ে নিখোঁজ আজিজুল আদম ব্যবসায়ী সোহরাব উদ্দিন ও কামাল উদ্দিনের কাছে আছে বলে জানায় তারা। পরে তাদের দেওয়া তারিখ অনুযায়ী এক বছর পর আবারও যোগাযোগ করা হলে কোনো তথ্য না দিয়ে উল্টো আজিজুলের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন।’
সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ আজিজুল হকের বাবা দুলাল মিয়া, মা পারভীন আক্তার ও প্রতিবেশি রিপন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।