টাঙ্গাইলে চার দিনে বিএনপির ৯৮ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলে বিএনপির ৯৮ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের নাশকতা ও আগের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার (৩৯ অক্টোবর) পর্যন্ত চার দিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপির এসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন ও সাধারন সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ ৩৩ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এতে আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণসহ নানা অভিযোগ এনে এ মামলা করে পুলিশ। মামলাটিকে গায়েবি মামলা বলে মন্তব্য করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানবীর আহমেদ জানান, জেলার ১২ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গত চার দিনে ৯৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃপক্ষ। টাঙ্গাইল সদরে ১২, বাসাইলে ছয়, সখীপুরে চার, মির্জাপুরে আট, দেলদুয়ারে নয়, নাগরপুরে ১৫, কালিহাতীতে আট, ঘাটাইলে ছয়, ভূঞাপুরে ১০, গোপালপুরে পাঁচ, ধনবাড়ীতে চার ও মধুপুরে ১১ জনকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিএনপির কয়েকজন নেতা অভিযোগ করে বলেন, গত শনিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে যোগদানে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এ গণগ্রেফতার করা হয়। হরতাল ও অবরোধে আমাদের নেতাকর্মীরা অংশ নিতে না পারে সেজন্য এমন গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ। এটা একটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য বাধা ও অন্যায় বলে দাবি করেন তাঁরা।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। আমাদের কোনো নেতাকর্মী বাড়িতে থাকতে পারছে না। সবার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি ও ভয় দেখানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের অবরোধ শুরু হবে। এসবকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন রাজপথে থাকতে না পারে এজন্য পুলিশ এই গণগ্রেপ্তার করছে।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘সরকারবিরোধী আন্দোলন বন্ধ করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে অন্যায় ও অত্যাচার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গত চার দিনে অন্তত ৯৮ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাদের চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দীন বলেন, ‘টাঙ্গাইল জেলায় নাশকতা ও আগের করা বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা আমাদের নিয়মিত রুটিন ওয়ার্ক। আমরা সারা বছরই বিভিন্ন মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে থাকি। জেলায় বর্তমানে পুলিশি টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। কেউ যেন জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না করতে পারে এজন্য টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সজাগ রয়েছে।’