অবশেষে বয়স্কভাতার কার্ড পেলেন সেই হামিদা
এনটিভি অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বয়স্কভাতার কার্ড পেলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার আমির-হামিদা দম্পতির হামিদা খাতুন। আজ রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে হামিদা খাতুনের হাতে বয়স্কাভাতার কার্ড তুলে দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন সমুন।
এ সময় স্বামী শতবর্ষী মো. আমির হোসেন বিশ্বাসও স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তবে তাঁর কপালে এখনও জোটেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড।
গত ১৫ এপ্রিল ‘আর কত বয়স হলে বয়স্কভাতা পাবেন তাঁরা’ শিরোনামে এনটিভি অনলাইন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আজ আমির-হামিদা দম্পতিকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে ডেকে আনা হয়। এ সময় দেখা যায়, বয়স্কভাতার জন্য হামিদা খাতুনের আবেদন জমা পড়েছে এক বছর আগে। কিন্তু আমির হোসেনের কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি।
উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের দিগনগর গ্রামের পাকা রাস্তার পূর্বপাশে বাড়ি মো. আমির হোসেন বিশ্বাসের। বয়স ১১০ বছর। জাতীয় পরিচয়পত্রে ৯৩ বছর। তাঁর স্ত্রী হামিদার বয়স জাতীয় পরিচয়পত্রে ৮১ বছর।
আমির হোসেন বিশ্বাসের জন্ম ১৯৩১ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ (জাতীয় পরিচয়পত্র সূত্রে)। স্ত্রী মোছা. হামিদা খাতুনের জন্ম (জাতীয় পরিচয়পত্র মোতাবেক) ১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি। তবে আমির হোসেন দাবি, দেশ ভাগের কিছুদিন পর সংসার পেতেছিলেন তাঁরা। সাত মেয়ে বিয়ের পর স্বামীর সংসারে চলে গেছেন। ছোট ছেলে আব্দুল আজিজ অজ্ঞাত রোগে মারা গেছেন। অপর ছেলে আরিফুজ্জামান ২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর আত্মহত্যা করেছেন। ছেলের বিধবা স্ত্রী এবং দুই ছেলে এক মেয়েসহ ছয়জনের পরিবার এখন আমির হোসেনের কাঁধে।
শৈলকুপা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন সমুন জানান এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার দলীয় বিবেচনায় এত দিন এই বৃদ্ধ দম্পতির নাম ভাতার তালিকাভুক্ত করেননি। দলীয় বিবেচনায় সরকার বয়স্কভাতা দেয় না দাবি করে তিনি বলেন, এনটিভি অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়। আজ সকালে তাঁদের ডেকে আনা হয়। এরপর হামিদা খাতুনের হাতে বয়স্ক ভাতার কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বৃদ্ধ আমির হোসেনের ভাতা আপাতত হচ্ছে না। সার্ভার সমস্যা থাকায় এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) যাচাই-বাছাই করা যাচ্ছে না। সে কারণে আমির হোসেনের ভাতা এখনই হচ্ছে না। আগামী দুই মাসের মধ্যে হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দলীয় কারণে ভাতা দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট দিগনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. জিসান পারভেজ শিমুল। বৃদ্ধ আমির হোসেনের পরিবার হতদরিদ্র বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
শিমুল বলেন, ‘আমি মাত্র দুই বছর মেম্বার হয়েছি। সমাজের মাতব্বররা তাঁদের (আমির-হামিদা) নাম তালিকাতে দেননি। যে কারণে এত দিন ভাতা দেওয়া হয়নি।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, দিগনগর ইউনিয়নে বয়স্কভাতা দেওয়া হচ্ছে এক হাজার ২২৩ জনকে।