দিনাজপুরে কাটা হচ্ছে ৩৪০টি গাছ
দিনাজপুরে সড়ক উন্নয়নকাজের নামে কাটা হচ্ছে ৩৪০টি গাছ। সড়ক বিভাগ ও জেলা পরিষদ একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করছে। ৩৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৩৪০টি গাছ কাটায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা পরিষদ ও সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বোচাগঞ্জের ধুকুরঝাড়ি থেকে বকুলতলা পর্যন্ত সেগুন, মেহগনি, আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির মোট ৩৪০টি মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। গাছগুলোর বয়স ৩৫ থেকে ৫০ বছর।
শহরের ঠিকাদার হামিদুর প্রায় ৯ লাখ টাকায় গাছগুলো নিলামে কিনে নিয়েছেন।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘২০২২ সালে সড়ক প্রশস্ত করার জন্য জেলা সড়ক বিভাগ জেলা পরিষদের কাছে ৩৪০টি গাছ কাটার এবং টেন্ডার আহ্বান করার অনুরোধ করে। সড়ক বিভাগের অনুরোধে আমরা ওই ৩৪০টি গাছের টেন্ডার আহ্বান করি। এর দায় সড়ক বিভাগের। আমাদের কোনো দায় নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এম আজিজ বলেন, সড়ক উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। উন্নয়নকাজের জন্য গাছগুলো কাটা হচ্ছে। তবে রাস্তা থেকে দূরের গাছ কেন কাটা হচ্ছে—এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি।
এলাকাবাসী ফরিদুল ইসলাম বলেন, শুধু ভাগ বাটোয়ারার কারণে রাস্তার দুই ধারের এই মূল্যবান গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে।’ আবার কেউ প্রতিবাদ করলে সরকারি কাজে বাধা এমন প্রশ্ন তুলে তাদের পুলিশি হয়রানির অভিযোগও করেন তিনি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তা থেকেও সাত-আট হাত দূরের গাছগুলোও ঠিকাদার কেটে ফেলছেন। যে গাছগুলো রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য কোনো অন্তরায় বা বাধা হতো না।
এলাকাবাসী জানায়, এই গাছগুলো কাটায় রাস্তার ধারের ছায়া আর থাকল না। পথচারীরা আর গাছের তলায় বিশ্রাম নিতে পারবে না।
এলাকার মো. সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, ‘গাছ কাটা বন্ধ করতে গেলেই আমরা আইনের আওতায় হয়রানি শিকার হব। এজন্য দেখা ছাড়া আর কোনো কিছুই করার নেই।’ তিনি সরকারি এই মূল্যবান গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
জেলা পরিষদের সদস্য শাহ নওয়াজ বলেন, রাস্তা থেকে দূরের গাছগুলো না কাটলেও পারত। এই গাছগুলো থেকে মানুষ অক্সিজেন পেত।’
এদিকে ঠিকাদার হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমার পাওনা ফিরিয়ে দিলে আমি গাছ কাটা বন্ধ করে দিব।’