নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে যত সুপারিশ
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ সুপারিশসমূহ জমা দেওয়া হয় ।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে ১৫০টির মতো সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। এর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে রয়েছে কোনো আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনরায় নির্বাচন হবে। ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কোনো নির্বাচনে ‘না’ ভোট বিজয়ী হলে ওই নির্বাচন বাতিল হবে এবং ওই নির্বাচনের প্রার্থীরা পরের ধাপে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এ ছাড়া, কমিশনের সুপারিশের মধ্যে আছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থা ও দুইবারের বেশি কেউ যেন প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন, সেই প্রস্তাব। একই ব্যক্তি একই সঙ্গে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা যাতে না হতে পারেন, সেই প্রস্তাবও।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের আরও সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান বাতিল করা, নির্বাচনের সময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা। প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতায় ঋণ-বিলখেলাপিদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা। প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে তিন বছর আগে অবসর গ্রহণ-সংক্রান্ত আরপিওর বিধান বাতিল করা।
এ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ১০০ আসন নিয়ে সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টির সুপারিশ করেছে কমিশন। উচ্চকক্ষের নির্বাচনের বিষয়ে কমিশনের মত, নিম্নকক্ষে দলগুলোর প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে তাদের জন্য উচ্চকক্ষে ৫০ শতাংশ আসন বরাদ্দ। অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ আসন নির্দলীয় ভিত্তিতে নাগরিক সমাজ, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মানবসেবা প্রদানকারী, শ্রমজীবীদের প্রতিনিধি, নারী উন্নয়নকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে সংখ্যানুপাতিক হারে পূরণ করা। তবে উচ্চকক্ষে সব মিলিয়ে নারীদের জন্য কমপক্ষে ৩০ শতাংশ আসন নিশ্চিত করতে হবে। উচ্চকক্ষের সদস্যদের বয়স কমপক্ষে ৩৫ বছর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক নির্ধারণ করার কথা বলেছে কমিশন।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ: