হেফাজতের আমিরের সঙ্গে সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সাক্ষাৎ
দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরে নিজের নির্বাচনি আসন কুমিল্লা মুরাদনগরে মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। এরমধ্যেই আলেম-ওলামাদের সাথে ভালোবাসার টানে ছুটে যান বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি দেশসেরা কওমি মাদরাসায়।
সফরের শুরুতেই তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি বাবুনগর মাদরাসায় যান। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান বাবুনগর মাদরাসার আলেম-ওলামাসহ হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ। এসময় তিনি হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিবউল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। হেফাজতে ইসলামের আমিরের স্বাস্থ্যের খবর নেন সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ।
হেফাজতে ইসলামের আমিরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করেন। দীর্ঘ আলাপ শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দোয়া চান।
দীর্ঘ ১৩ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে হেফাজতে ইসলামের আমির বলেন, এদেশের আলেম ওলামারা কায়কোবাদ সাহেবকে খুব ভালোবাসেন। কারণ তিনি সব সময়ই আলেম ওলামা এবং মাদরাসার সাথে সুসম্পর্ক রাখেন। তার মত দ্বিনদার, পরহেজগার নেতা সকল থানায় থাকলে দেশের মানুষ উপকৃত হত। আল্লাহ রাসুল ইসলাম নিয়ে কেউ কটূক্তি করার সাহস পেত না।
এসময় তিনি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করেন।
সেখান থেকে নানুপুর ওবায়দিয়া মাদরাসায় যান সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ। সেখানে নানুপুর মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সালাহউদ্দিন নানু পুরীসহ মাদরাসা ও দরবারের হাজার হাজার ছাত্র শিক্ষক ও তৌহিদী জনতা তাকে স্বাগত জানান।
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদকে নিজেদের অভিভাবকই মনে করেন পীর মাশায়েখ ও কুরআন প্রেমী জনতা। আল্লাহ তায়ালা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে জাতির খেদমতে আরও নেক হায়াত দান করার জন্য দোয়া করেন নানুপুরের বর্তমান পীর মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী।
এরপর তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বিনি মারকায মেখল মাদরাসায় যান। বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য আরবি বিশ্ববিদ্যালয় হাটহাজারী মাদরাসায় গেলে মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা খলিল আহমদ ক্বুরাইশী, মাওলানা আনোয়ার শাহ আযহারী, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা আবদুস সবুর প্রমুখ অভ্যর্থনা জানান সাবেক এ মন্ত্রীকে।
কওমি অঙ্গনের সবচেয়ে বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাটহাজারী মাদরাসায় গিয়ে সবার ভালোবাসায় সিক্ত হন কায়কোবাদ। এসময় তিনি বলেন, আলেম ওলামারা নবিদের ওয়ারিশ। তাদের সম্মান করলে আল্লাহ খুশি হন। আর তাদের যারা বেইজ্জত করে জুলুম নির্যাতন করে, আল্লাহ তাদেরকে বেইজ্জত করেন।
আলেম ওলামাদের সম্মান করে আল্লাহর বিধানমতে জীবন পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়ে এ সময় তিনি শীর্ষ দুই আলেমকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের মিথ্যা মামলার ও জীবনের হুমকি নিয়ে ১৩ বছর দেশান্তরী থেকে ফেরার পর সর্বপ্রথম আমার মায়ের কবর জিয়ারত করেছি। এরপরই দুই আকাবিরের কবর জিয়ারত ও শীর্ষ আলেমদের সাথে সাক্ষাতে চট্টগ্রাম সফরে এসেছি।
এসময় তিনি দেশ, জাতি, উম্মাহ ও দ্বিনের কল্যাণে কাজ করার জন্য সবার দোয়া চান।
আলেম ওলামাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি (র.), আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার সাবেক আমির শহীদ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (র.), মুফতীয়ে আজম ফয়জুল্লাহ র., আল্লামা জমিরউদ্দীন নানুপুরী র.,আল্লামা সুলতান আহমদ নানুপুরী আল্লামা হারুন র. এর কবর জিয়ারত করেন।
বিশেষ করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আওয়ামী জালিম স্বৈরশাসকের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী কবর জিয়ারত করেন।
দীর্ঘ এ সফরে সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সফরসঙ্গী ছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা গাজী মুহাম্মদ ইয়াকুব ওসমানীসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ।