বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে সমর্থন চাইল বাংলাদেশ
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সহজ উত্তরণে এলডিসি গ্রুপের পক্ষে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ট্রেড প্রেফারেন্সের জন্য ১২ বছর সময় বর্ধিত করার যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা সব পক্ষকে সমর্থন করতে হবে। বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা—ট্রিপস ওয়েভার কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন অর্জন করেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ডব্লিউটিও ‘হংকং মিনিস্টেরিয়াল ডিক্লেয়ারেশন’ অনুযায়ী, শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা এবং ‘নাইরোবি মিনিস্টেরিয়াল ডিক্লেয়ারেশন’ অনুযায়ী, এলডিসির জন্য প্রেফারেন্সিয়াল রুলস অব অরিজিন উন্নত দেশগুলোকে প্রদান করতে হবে। এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও কাঠামোগত উন্নয়নে আঙ্কটাডকে কার্যকর সহযোগিতা দিতে হবে। কোভিড-১৯-এর ফলে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্জিত অগ্রযাত্রা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করে যাচ্ছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জেনেভার ইউনাইটেড নেশনস অফিসের আঙ্কটাড সচিবালয়ের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বাণিজ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়ালি সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা প্রয়োজন। কোভিড-১৯-এর অভিঘাত, ডিজিটাল ডিভাইড, জলবায়ুর বৈরী প্রভাব মোকাবিলার জন্য চলমান ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজার্স-সহ (আইএসএম) যুগোপযোগী আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে টেকনোলজি ট্রান্সফার এবং উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে কাঠামোগত সহায়তা দিতে হবে। আগামীতে অনুষ্ঠেয় আঙ্কটাড-১৫, এমসি-১২, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশন ও এলডিসি-৫ সম্মেলন ও কার্যক্রমগুলোতে বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এলডিসি এবং গ্রাজুয়েটিং এলডিসির স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো কার্যকরভাবে উপস্থাপনের জন্য আঙ্কটাডকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, আঙ্কটাড জাতিসংঘের আন্তরাষ্ট্রীয় একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন বিষয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নীতি ও উন্নয়ন সহযোগিতা দিয়ে থাকে। আগামী ৩ থেকে ৭ অক্টোবর আঙ্কটাড-এর ১৫তম অধিবেশন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। কোভিড-১৯ পরবর্তী এ অধিবেশন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আঙ্কটাড-এর অধিবেশনে কোভিড প্রেক্ষাপটে স্বল্পোন্নত দেশগুলো ট্রেড, ফিন্যান্স ও টেকনোলজি সহযোগিতাসহ আগামী দশ বছরের জন্য অ্যাকশন প্ল্যান (২০২২-৩১) আলোচিত হবে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে ওই অধিবেশনের প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবে ৪৬টি স্বল্পোন্নত দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের এ সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ সম্মেলনের আয়োজক মালাওয়ি’র বাণিজ্যমন্ত্রী এবং আঙ্কটাডের সেক্রেটারি জেনারেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এলডিসি বাণিজ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে বাংলাদেশের সব প্রস্তাবসহ একটি ‘মিনিস্ট্রেয়াল ডিক্লেয়ারেশন’ দেওয়া হয়।