গভর্নরকে তলব, বিমানবন্দরে নেমেই যেতে হবে মন্ত্রণালয়ে
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে আজ সোমবার বিকেলে জরুরি ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে গভর্নরের দপ্তরকে জানানো হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ হ্যাক হওয়ায় ঘটনার এক মাস পেরোলেও এখনো অর্থ মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠিকভাবে কিছু জানায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ জন্য ব্যাখ্যা চাইতে গভর্নরকে তলব করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদের এক সদস্য জানান, ‘আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। হয়তো বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির বিষয়ে কথা বলতে পারেন তিনি।’
গভর্নরকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তলব করা হয়েছে কি না—তা জানতে চাইলে গভর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ এফ এম আসাদুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গভর্নর ড. আতিউর রহমান চারদিনের ভারত সফর শেষে আজ বিকেল ৪টায় দেশে ফিরবেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) বোর্ড মিটিং হওয়ার কথা। কিন্তু বিকেলে বৈঠক আছে কি না সে ব্যাপারে কিছু জানি না।’
রিজার্ভের অর্থ চুরির হওয়ার ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানোর জন্য গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এস আসলাম ডেপুটি গভর্নরদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পর সচিব বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট নয়। কেন অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়নি সে বিষয়ে গভর্নরের কাছে জানতে চাওয়া হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও অর্থসচিব এস আসলাম বলেন, ‘ঘটনা ঘটার পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে কিছু জানানো হয়নি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত করা হয়নি। কোনো আলোচনাতেও বিষয়টি আনা হয়নি। অডিট কমিটির দুই মিটিংয়ে আমি ছিলাম। সেখানেও বিষয়টি আলোচনা করা হয়নি।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘তারা এখন (গতকাল) বলছে তারা তদন্ত করে পুরো বিষয়টি জানাবে। কিন্তু আমি তো মনে করি আমাদের বিষয়টি জানানোর প্রয়োজন ছিল। এতে মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট নয়। আজকে (গতকাল রোববার) আমি বিষয়টি জানতে এসেছি। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গেলাম। রিপোর্ট তৈরি করে এটি অর্থমন্ত্রীকে জানাব। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।’
গতকাল সচিব আরো বলেন, ‘গভর্নর দেশের বাইরে রয়েছেন, আগামীকাল (আজ সোমবার) হয়তো তিনি দেশে আসবেন। পরের দিনই (১৫ মার্চ) জরুরি ভিত্তিতে বোর্ডসভা ডাকতে বলা হয়েছে তাদের (কেন্দ্রীয় ব্যাংক)। সেখানে কেন অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়নি সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।’