রিজার্ভ চুরি : প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ
রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপও নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ব্যাপারে ফিলিপাইনের সঙ্গে পারস্পরিক আইনি সহযোগিতার মাধ্যমে যদি কিছু করা যায় তাও করা হবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা।
শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘ফিলিপাইনে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি টিম অর্থ উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) সঙ্গে আমাদের টিমের আলোচনা হয়েছে। আমাদের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিট্যান্সসের (পারস্পরিক আইনি সহযোগিতা) যে সুযোগ আছে তার মাধ্যমে অর্থ আদায়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কি না, সে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’
শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘যেহেতু সার্বিকভাবে সব জায়গায় কার্যক্রমগুলো চলছে এবং এই জায়গা থেকে যা যা করা দরকার; সেখানে যদি আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটাও নেবে। আবার মিউচ্যুয়ল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্সির মাধ্যমে যদি করা যায় সেটিও করা হবে। সমস্ত কিছু দেশের স্বার্থ বিবেচনায় এবং আইন অনুযায়ী করা হবে।’
তবে বিদেশিদের বিরুদ্ধে মামলা করে টাকা আদায়ের প্রয়োজন পড়বে কি না, জানতে চাইলে শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘ফিলিপাইনে উদ্ধারকৃত বা জব্দ করা টাকা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রসিড অব ক্রাইম। এই টাকাগুলোকে উদ্ধার করা, বাজেয়াপ্ত করার পর এটার বেনিফিশিয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু অবশ্যই তাদের কিছু আইনি কার্যক্রম বা আইনি পদক্ষেপের আবশ্যকতা থাকাটাই স্বাভাবিক। সেটা তাদের কাছে আছে। সেটার মধ্য দিয়ে গিয়েই তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে।’
টাকা উদ্ধারে আইনি প্রক্রিয়া যে কারণে প্রয়োজন পড়বে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভঙ্কর বলেন, ‘কাগজে কলমে সন্তুষ্ট থাকতে হবে, এই টাকাটা আসলে আমার। আমার যেমন কাগজ কলম আছে, তার (ফিলিপাইন) কাছেও আছে। এই বিষয়গুলোর জন্যই আসলে এই প্রসেডিং, এই সমস্ত কিছু, আইনের নিয়মাচার, নীতিমালা। আগামীতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় এই বিচার করেই টাকাটা ফেরত দেওয়া হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণের প্রয়োজন পড়লে আমরা তা করব।’
তবে ফিলিপাইনে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি টিম টাকা উদ্ধারে সে দেশে কাজ করছে উল্লেখ করে শুভঙ্কর বলেন, ‘তারা কিন্তু সময়ে সময়ে আমাদের বিষয়গুলো জানাচ্ছে। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে যে পদক্ষেপগুলো নিতে বলবে সে পদক্ষেপগুলো আমরা অবশ্যই গ্রহণ করব। ’
পুরো অর্থ আদায়ের সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে শুভঙ্কর বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতটুকু আদায় হয়েছে সেই আদায় যদিও প্রায় আট ভাগের এক ভাগ, কিন্তু এটাতে বুঝা যাচ্ছে পুরো টাকাটাই উদ্ধার করা হয়তো সম্ভব হবে, আমরা আশাবাদী। তবে সব তো আর আদায় হয় না; যে খরচ গেল, যে কষ্টটা যাচ্ছে, মনের দিক থেকে যতটা পেরেশানি গেল, ভাবমূর্তিরও একটা বিষয় আছে, আমাদের মনটা যত দিন খারাপ থাকে এগুলোও একটা বিষয় থাকে। এসব তো আর ফেরত পাওয়া যাবে না।’